দেশজুড়ে

১২০০ টাকা কেজি দরে ভারতে গেলো ৫৪ টন ইলিশ

বেনাপোল বন্দর দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১০টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে ৫৪ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে গেলো। প্রতি কেজি মাছের রপ্তানি মূল্য পড়ছে ১০ মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১২০০ টাকা প্রতি কেজি রপ্তানি মূল্য।

Advertisement

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল মৎস্য অফিসের ফিশারিজ কোয়ারেন্টাইন অফিসার মাহবুবুর রহমান।

তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতিপত্র নিয়ে ইলিশের চালান বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্দরে আসার পর মান নিয়ন্ত্রণ যাচাই করে ভারতে রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়। আজ প্রথম চালানে ১০টি প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে ৫৪ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় কোনো ইলিশ রপ্তানি হবে না। শনিবার আবার হবে। তবে রোববার ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ইলিশ নিতে আগ্রহী হলে রপ্তানি করা হবে। মূলত রোববার ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কোনো মাছই আমদানি-রপ্তানি করেন না।

ইলিশ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো পাবনার দিলালপুরের মেসার্স আহনাফ ট্রেডিং, কক্সবাজার ফিশারিঘাটের জে. এস এন্টারপ্রাইজ, সাতক্ষীরার লাবসার সুমন ট্রেডার্স, ঢাকার যাত্রাবাড়ীর সাজ্জাদ এন্টারপ্রাইজ, একই এলাকার স্বর্ণালী এন্টারপ্রাইজ, চট্টগ্রামের কালুরঘাটের প্যাসিফিক সি ফুডস লিমিটেড, পাবনার গোপালপুরের নোমান এন্টারপ্রাইজ, খুলনার রুপসা এলাকার রূপালী সি ফুডস লিমিটেড, যশোরের নড়াইল রোডের জে.বি.এস ফুড প্রোডাক্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও যশোরের জেস টাওয়ারের এম এ পি ইন্টারন্যাশনাল।আরও পড়ুন:প্রথম চালানে ভারত গেলো ১৮ টন ইলিশ আখাউড়া হয়ে ৭৩০০ কেজি ইলিশ গেলো ভারতে 

এর আগে ২৫ সেপ্টেম্বর ৪৯ রপ্তানিকারককে ২৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানিতে ছাড়পত্র দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ৪৮ জনকে ৫০ মেট্রিক টন করে ও একজনকে ২০ মেট্রিক টন মাছ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়। এই অনুমতির মেয়াদ আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত। উৎসবের মৌসুমে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গত কয়েক বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে পদ্মার ইলিশ যেতো। আগের সরকারগুলো একে বলত, ‘উপহারের ইলিশ’। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ভারতে ইলিশ পাঠানো নিয়ে কঠোর মনোভাবের কথা জানায়। পরে অবশ্য অবস্থান পরিবর্তন করেছেন তারা।

Advertisement

বন্দর সংশিষ্টরা জানান, ২০১২ সালে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ হয়েছিল। পরে আবার শুরু হয়। গত বছর রপ্তানির অনুমতি ছিল ৩ হাজার ৯০০ মেট্রিন টন। এ বছর অনুমতি মিলেছে প্রায় আড়াই হাজার টনের। জানা যায়, কলকাতার ভারতীয় মাছ আমদানিকারকদের সংগঠন ফিশ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (এফআইএ) থেকে গত ৯ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের কাছে দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রপ্তানির বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ জানানো হয়। পরে বিশেষ বিবেচনায় সরকার ভারতে ২৪২০ মেট্রিক টন রপ্তানির অনুমতি দেয়। এরপর বৃহস্পতিবার থেকে রপ্তানি শুরু হয়। সাধারণ ব্যবসায়ীরা বলছেন ইলিশ রপ্তানিতে দুই দেশের মধ্যে সু-সম্পর্ক বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখবে।

তবে বিশেষ বিবেচনায় কেবল দুর্গাপূজার ইস্যুতে ইলিশ মাছ রপ্তানি করা হয়। গত বছর রপ্তানির অনুমতি ছিল ৩ হাজার ৯০০ মেট্রিন টনের। রপ্তানি করা হয় মাত্র ৬৩১ মেট্রিক টন ২৪০ কেজি ইলিশ। তবে এবারও সম্পূর্ণ ইলিশ রপ্তানি করতে পারবে না বলে কয়েকজন অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানের মালিক জানিয়েছেন। বাজারে ইলিশের দাম চড়া। তারপরও রপ্তানি খবরে মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। এ অবস্থায় ইলিশ পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ রয়েছে।

বেনাপোল কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার অথেলো চৌধুরী জানান, বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা ১০ মার্কিন ডলার মূল্যে প্রতি কেজি ইলিশ সরবরাহ করছেন। বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য প্রায় ১২০০ টাকা। রাত ৮টা পর্যন্ত ১০টি প্রতিষ্ঠান সাড়ে ৫৪ মেট্রিক টন ইলিশ বেনাপোল কাস্টমস হাউজ থেকে ছাড়পত্র নিয়ে ভারতে রপ্তানি করেছেন।

মো. জামাল হোসেন/জেএইচ

Advertisement