প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে পৃথক করতে রিট মামলা করা সাবেক জেলা জজ মাসদার হোসেন। সাক্ষাৎকালে মাসদার হোসেন ১৯৯৪ সালে করা বহুল আলোচিত সেই মামলা এবং ১৯৯৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া রায়টি বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
Advertisement
একই সঙ্গে তিনি দেশের অধস্তন আদালতের বিচারকদের পক্ষে ‘মাসদার হোসেন মামলা’ পরিচালনায় বর্তমান প্রধান বিচারপতির বাবা ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের অবদান সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করেন।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম সাক্ষাতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সাক্ষাৎকালে মাসদার হোসেন বলেন, সম্পূর্ণ স্বতঃপ্রণোদিতভাবে বিনা পারিশ্রমিকে মামলাটি পরিচালনা করে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণে ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ যে অনন্য ভূমিকা পালন করেছেন, সে অবদানকে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের সদস্যরা আজও কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।
Advertisement
বিশেষত, মাসদার হোসেন মামলার রায়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের ব্লু-প্রিন্ট প্রস্তুত থাকার পরেও তৎকালীন রাজনৈতিক সরকারের সদিচ্ছার অভাবে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ কার্যকর না হওয়ার প্রেক্ষাপটে চট্টগ্রামে ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের এক সফরের স্মৃতি উল্লেখ করেন মাসদার হোসেন।
প্রধান বিচারপতিকে তিনি জানান, ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ চট্টগ্রামে তার কাছে ব্যক্ত করেছিলেন যে, বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের রায় বাস্তবায়ন তিনি তার জীবদ্দশায় দেখে যেতে চান।
মাসদার হোসেন গত ২১ সেপ্টেম্বর দেশের বিচার বিভাগের সার্বিক মানোন্নয়নে প্রধান বিচারপতি কর্তৃক ঘোষিত রোডম্যাপে বিচার বিভাগের কার্যকর স্বাধীনতা ও স্বতন্ত্রীকরণের রূপরেখা ফুটে উঠেছে মর্মে প্রধান বিচারপতিকে ধন্যবাদ জানান এবং আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, প্রধান বিচারপতির হাত ধরেই বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ চূড়ান্তরূপে বাস্তবায়ন হবে।
মাসদার হোসেন মামলার রায় ১৯৯৯ সালে ২ ডিসেম্বর ঘোষিত হলেও পরবর্তী রাজনৈতিক সরকারগুলো ওই রায় বাস্তবায়ন করেনি। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি গঠিত তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের লক্ষ্যে ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন এবং জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন বিধিমালা, ২০০৭ প্রণয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে পৃথক জুডিসিয়াল সার্ভিস গঠন করে।
Advertisement
বর্তমান প্রধান বিচারপতি গত ২১ সেপ্টেম্বর দেশের অধস্তন আদালতের বিচারকদের প্রতি অভিভাষণ প্রদানকালে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠাসহ বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের পরিপূর্ণ রূপরেখা তুলে ধরেন।
এফএইচ/এমকেআর/জেআইএম