আগামী বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি থেকেই শুরু হবে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। রাজধানীর পূর্বাচলে এই মেলা অনুষ্ঠিত হবে। এবারের মেলা প্রাঙ্গণ কিছুটা খোলামেলা রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বয়স্কদের বিশ্রামের জন্য জায়গা রাখারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ কারণে গত বছরের তুলনায় মেলায় প্যাভিলিয়ন ও স্টলের সংখ্যা কিছুটা কম রাখা হবে। এছাড়া অ্যাপে মিলতে পারে মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশের টিকিট।
Advertisement
এবারের মেলায় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ সাফল্যগাঁথা নিয়েও স্টল রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ‘মুগ্ধ’ কর্নার নির্মাণের পাশাপাশি ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের সম্মানে আর কী কী করা যায় তা নিয়েও ভাবছে মেলার আয়োজক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের পরামর্শ নেওয়া হতে পারে। ইপিবি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সাধারণত জানুয়ারি মাসের প্রথমদিন থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা শুরু হয়। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে চলতি বছরের বাণিজ্যমেলা শুরু হয় ২১ জানুয়ারি। রাজধানীর উপকণ্ঠ পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই মেলা চলে। এটি ২৮তম বাণিজ্যমেলা।
আরও পড়ুন ২০২৫ সালের বাণিজ্যমেলা জানুয়ারিতেইসেরা প্যাভিলিয়নের স্বীকৃতি পেলো প্রাণ-আরএফএলের ২ প্রতিষ্ঠানদেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন, উৎপাদনে সহায়তার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবির যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এ মেলা হতো শেরেবাংলা নগরে। কোভিড মহামারির কারণে ২০২১ সালে মেলা করা যায়নি। এরপর মহামারির বিধিনিষেধের মধ্যে ২০২২ সালে প্রথমবার মেলা চলে যায় পূর্বাচলে বিবিসিএফইসিতে। ২০২৪ সালে তৃতীয়বারের মতো স্থায়ী ভেন্যু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) বাণিজ্যমেলা অনুষ্ঠিত হয়। ২০২৫ সালের মেলা হবে এই ভেন্যুর চতুর্থ।
Advertisement
ইপিবি সূত্রে জানা গেছে, আগামী বাণিজ্যমেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের সম্মানে ‘মুগ্ধ’ কর্নার নির্মাণ করা হবে। থাকবে আন্দোলন নিয়ে চিত্র প্রদর্শনী। মাসব্যাপী এই মেলায় চার সপ্তাহে চারটি সেমিনার আয়োজন করা হবে।
যোগাযোগ করা হলে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমরা ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকেই বাণিজ্যমেলা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর আগে আমরা জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে মেলা শুরু করার চিন্তাভাবনা করেছিলাম। তারপর দেখা গেলো শীতের মৌসুম থাকবে না, আবার বইমেলা শুরু হবে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে। এসব বিষয় চিন্তাভাবনা করে সবার মতামত নিয়ে জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে মেলা শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, আগামী বছরের বাণিজ্যমেলা নিয়ে আমরা নতুন কিছু চিন্তাভাবনা করছি। শিশু-কিশোরদের জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কিছু আয়োজন রাখবো। বয়স্ক লোকদের বিশ্রামের জন্য আলাদা জায়গা রাখা হবে। এসএমইকে প্রমোট করতে তাদের জন্য আলাদা জায়গা থাকবে। মেলা প্রাঙ্গণ খোলামেলা করা হবে, যেন মানুষের চলাচলে সুবিধা হয়।
তিনি আরও বলেন, মেলায় কতগুলো প্যাভিলিয়ন বা স্টল দেওয়া হবে সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আমরা লে-আউটগুলো রিভাইস করছি। আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো। যেহেতু মেলা প্রাঙ্গণ খোলামেলা রাখা হবে, সেজন্য এবার প্যাভিলিয়ন ও স্টলের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কম হবে।
Advertisement
আনোয়ার হোসেন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের যে আত্মত্যাগ সেটা তুলে ধরার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যেমন আমরা পানির একটা ‘মুগ্ধ কর্নার’ করবো। এছাড়া আরও কিছু সংযুক্ত হবে। এজন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা সমন্বয়ক ছিলেন তাদের সঙ্গে আমরা পরামর্শ করবো। তারা নতুন আইডিয়া দিতে পারে।
আরও পড়ুন বাণিজ্যমেলায় ৩৯২ কোটি টাকার রপ্তানি আদেশতিনি বলেন, আমরা একটা অ্যাপ করার চিন্তাভাবনা করছি। অ্যাপ থেকে মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশের টিকিট কাটা যাবে। এছাড়া অ্যাপ করলে এখানে (মেলা প্রাঙ্গণে) যেসব স্টল থাকবে তাদের পণ্য দেখতে পারবে, কিনতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, মেলা প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় তলার হল রুমে আমরা মেলার চার সপ্তাহে চারটি সেমিনার করার পরিকল্পনা নিয়েছি। সম্ভাবনাময় পণ্য বা খাত নিয়ে এই সেমিনার করা হবে।
এ বছর মেলার উদ্বোধন করবেন কে? এমন প্রশ্ন করা হলে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, এটা এখনো ঠিক হয়নি। সাধারণত সরকারপ্রধান মেলার উদ্বোধন করেন। আমরা সেভাবেই অ্যাপ্রোচ করবো।
এমএএস/এমকেআর/জেআইএম