নাটোরের গুরুদাসপুরে চিকিৎসার অবহেলায় গর্ভের শিশু মৃত্যুর ঘটনায় আলপনা নামের একটি ক্লিনিক সিলগালা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার চাঁচকৈড় বাজারের ওই ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়।
Advertisement
ভ্রাম্যমাণ পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুল ইসলাম। এসময় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম, গুরুদাসপুর থানার উপ-পরিদর্শক মো. মাসুদ রানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, গর্ভবতী সাথী খাতুন শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দিলে আলপনা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। সেখানে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে ‘এ পজিটিভ’ বলা হয়। তাৎক্ষণিক ‘এ পজিটিভ’ গ্রুপের এক ব্যাগ রক্ত তার শরীরে প্রয়োগ করেন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। রক্ত প্রবেশের পরপরই তার শ্বাসকষ্টসহ শরীরজুড়ে লাল চাকার মতো হয়ে যায়। এসময় গর্ভের শিশুর নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি খারাপ হলে সোমবার দুপুরে সাথী খাতুনকে পাশের হাজেরা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে পরীক্ষার পর তার শরীরে ভুল রক্ত প্রয়োগে করায় গর্ভের সন্তান মারা যায় বলে জানানো হয়।
ওই রাতে অপারেশনের মাধ্যমে গর্ভের মৃত শিশুটি বের করা হয়। শিশুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য প্রথমে নাটোর মর্গে এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়। তার অবস্থা অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার দুপুরে তাকে রাজশাহী মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়। আলপনা ক্লিনিক মালিক আলাল উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, ওই রোগীকে আমরা কোনো চিকিৎসাই দেইনি। এর দায়-দায়িত্ব হাজেরা ক্লিনিকের।
Advertisement
সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুল ইসলাম বলেন, প্রসূতির শরীরে ভুল রক্ত প্রয়োগে গর্ভের শিশু মৃত্যুর ঘটনায় বুধবার ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়েছে। ওই সময় ক্লিনিকের কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
নাটোরের সিভিল সার্জন মো. মশিউর রহমান ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ২০২২ সালে আলপনা ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়েছিল। তারা বেআইনিভাবে ক্লিনিকটি চালাচ্ছিলেন। গর্ভবতীর শরীরে ভুল রক্ত প্রয়োগে ৯ মাসের শিশুর মৃত্যুর সত্যতা পাওয়ায় ক্লিনিকটি আবার সিলগালা করা হয়।
রেজাউল করিম রেজা/আরএইচ/এমএস
Advertisement