দেশজুড়ে

মিরসরাইয়ে বেড়েছে সাপের উপদ্রব, ৯ মাসে আহত ৪ শতাধিক

ভয়াবহ বন্যার পর চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে সাপের উপদ্রব বেড়েছে। চলতি বছরের ৯ মাসে উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভায় প্রায় ৪ শতাধিক মানুষকে সাপে কেটেছে। সাপের কামড়ে মারা গেছে এক স্কুলছাত্র। এছাড়া ২০২৪ সালের প্রথম সাত মাসে সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়েছেন ২০৯ জন। বন্যার কারণে সবশেষ আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে আহত হয়েছেন ২০৩ জন।

Advertisement

সাপের কামড়ে যে মারা গেছে সে হলো জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সীমান্ত নাথ। জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের দেওয়ানপুর গ্রামের কান্তি নাথের ছেলে।

এদিকে বন্যার পর প্রতিদিনই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটা রোগী আসছে। অনেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছে। অনেকের অবস্থা খারাপ হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেকে) রেফার করা হচ্ছে।

মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত হাসপাতালে ২০৯ জন সাপে কাটা রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ২০৩ জন রোগী। জানুয়ারি মাসে দুজন, ফেব্রুয়ারি মাসে ৯ জন, মার্চ মাসে ১৬ জন, এপ্রিল মাসে ৩৬ জন, মে মাসে ৪৫ জন, জুন মাসে ২৯ জন, জুলাই মাসে ৭০ জন। আগস্ট মাসে ও চলতি সেপ্টেম্বর মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত ২০৩ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। মূলত আগস্ট মাসে ভয়াবহ বন্যার পানিতে বিষধর সাপ মানুষের বাড়িঘরে ঢুকে পড়েছে।

Advertisement

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছাড়াও সাপে কাটার পর অনেক রোগী, পার্শ্ববর্তী সীতাকুন্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফেনী সদর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, সাপে কাটা একজন রোগীকে প্রায় ১২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়। যদি ওই রোগীর শরীরের সাপের বিষক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে তখন এন্টিভেনম প্রয়োজন হয়। প্রয়োজন না হলে রোগীকে এন্টিভেনম প্রয়োগ করলে উপকারের চেয়ে ক্ষতি হয় বেশি। ১০ ভাইলমে এক ডোজ, একজন রোগীকে ১০ ভাইলম এন্টিভেনম প্রয়োগ করা লাগে। বর্তমানে হাসপাতালে ২০ ভাইলম এন্টিভেনম মজুত রয়েছে। যা রোগী অনুযায়ী কম।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. নাছির উদ্দীন বলেন, সাপে কাটা মাত্রই হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়া উচিৎ। কোনো ওজা, বৈদ্যর কাছে গিয়ে সময়ক্ষেপণ করা যাবে না। এন্টিভেনম লাগবে কি না সেটা শুধুমাত্র এ বিষয়ে অভিজ্ঞ ডাক্তার রোগীর লক্ষণ দেখে বলতে পারবেন।

এ বিষয়ে মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.মিনহাজ উদ্দিন রানা জানান, মিরসরাই উপজেলায় পূর্বের তুলনায় সাপে কাটা রোগী বেড়েছে। এমনিতে বৃষ্টির সময় রোগী বেশি থাকে। তবে এবার বন্যার কারণে এর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।

Advertisement

এম মাঈন উদ্দিন/জেডএইচ/জেআইএম