মহাপরিচালকের দায়িত্ব নেওয়ার পর দেখা করতে আসাদের প্রায় ৯৫-৯৭ শতাংশ মানুষই ব্যক্তিগত নানা সমস্যা এবং চাওয়া নিয়ে আসেন এমন মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন।
Advertisement
তিনি বলেন, যারা আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন, প্রায় সবাই ব্যক্তিগত চাওয়া নিয়ে আসেন, জাতির সমস্যা-সংকট নিয়ে কেউ কথা বলেন না।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অ্যালায়েন্স ফর হেলথ রিফর্মস বাংলাদেশ আয়োজিত ‘স্বাস্থ্যখাতের সংস্কার: নাগরিক সমাজের ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন বলেন, আমি গত কিছুদিন হলো স্বাস্থ্যের দায়িত্বে এসেছি। নতুন দায়িত্বে আসার পর আমার সঙ্গে যারা দেখা করতে এসেছেন, তাদের মধ্যে প্রায় শতকরা ৯৫ থেকে ৯৭ শতাংশ এসেছেন নিজের সমস্যা-চাওয়া নিয়ে। সবাই শুধু এসে বলে আমার এই সমস্যা, ওই সমস্যা.. কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার কাছে কেউ এসে আমাদের সার্বিক জাতির সমস্যাগুলোর কথা বলেনি। এটাই হলো আমার গত কয়েক দিনের অভিজ্ঞতা।
Advertisement
তিনি বলেন, একটা দারুণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা দেশে একটা পরিবর্তন এনেছি। সেই আলোকে আমাদের এই মুহূর্তে অনেক সংস্কার করার সুযোগ রয়েছে। তবে যে বিষয়গুলো আমাদের সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়, এরমধ্যে এক নম্বর হচ্ছে, অনেক বিষয়ে আমরা ঐক্যমতে আসতে পারি না। কারণ হলো আমরা অনেক ক্ষেত্রেই নিজের ব্যক্তিগত মতের ওপরই বেশি দৃঢ় থাকি।
স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাটাকে সংস্কার করার সময় আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতা, দেশের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশসহ সামগ্রিক সবকিছুই বিবেচনা করতে হবে।
চিকিৎসায় খরচ কমানো প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, একটা বড় অঙ্কের টাকা জনগণের পকেট থেকে চলে যাচ্ছে। আমি একজন কার্ডিয়াক সার্জন, এ বিষয়গুলো আমি অনেক বেশি দেখি এবং লক্ষ্য করি। প্রায়ই এমন রোগী আসতো যে তার শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। এমনকি অনেককে চিকিৎসার জন্য তার থাকার ভিটেমাটিটাও বিক্রি করে দিতেও দেখেছি। এজন্য আমি সব সময় চেষ্টাও করেছি কীভাবে তাদের জন্য কিছু করা যায় বা ব্যয়টাকে কীভাবে সংকোচন করা যায়। এখন যেহেতু আমি স্বাস্থ্যের একটা গুরুত্বপূর্ণ পদে এসেছি, আমি আমার অবস্থান থেকে চেষ্টা করবো কীভাবে চিকিৎসায় আউট অব পকেট এক্সপেন্ডিচার কমানো যায়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আহমেদ মুশতাক রাজা চৌধুরী এবং আইসিডিডিআর,বি-র সিনিয়র ডিরেক্টর ড. শামস আল আরেফিন। সূচনা বক্তব্য রাখেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আবু জামিল ফয়সাল।
Advertisement
এসময় অ্যালায়েন্স ও স্বাস্থ্যখাতের প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রসঙ্গে উপস্থাপনা পেশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ ও সহযোগী অধ্যাপক ড. সুজানা করিম।
এএএম/এসএনআর/জেআইএম