ধর্ম

ঈমান ছাড়া নেক আমল মূল্যহীন

আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্কের প্রথম ধাপই হলো ঈমান অর্থাৎ আল্লাহর অস্তিত্বের ওপর বিশ্বাস, তাকে একমাত্র ‍সৃষ্টিকর্তা, অধিপতি ও ইলাহ হিসেবে অন্তরে বিশ্বাস করা এবং মুখেও স্বীকার করা। ঈমান ছাড়া আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্কই প্রতিষ্ঠিত হয় না। ঈমান ছাড়া আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নেক আমল করা সম্ভব নয়। ঈমান ছাড়া নেক আমল বা ভালো কাজের পরকালীন কোনো মূল্য নেই।

Advertisement

কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে দয়াময় তাদের জন্য সৃষ্টি করবেন ভালবাসা। (সুরা মারিয়াম: ৯৬) আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, যে সৎ কাজ করবে মু’মিন হয়ে, তার অবিচার বা ক্ষতির কোন আশংকা নেই। (সুরা ত্বহা: ১১২) আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, আর যারা তাঁর নিকট আসবে মুমিন অবস্থায়, সৎকর্ম করে তাদের জন্যই রয়েছে সুউচ্চ মর্যাদা। (সুরা ত্বহা: ৭৫)

ঈমান না থাকায় মুনাফিকদের আমল ধ্বংস করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, এরা ঈমান আনেনি। ফলে আল্লাহ তাদের আমলসমূহ বিনষ্ট করে দিয়েছেন। (সুরা আহজাব: ১৯)

তবে অবিশ্বাসী অবস্থায়ও যারা মানুষের সাথে ভালো আচরণ করে, মানুষের উপকার করে, দান-সদকা করে, অসততা ও জুলুম থেকে বিরত থাকে, এর বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা তাকে ঈমান দান করতে পারেন। হাকিম ইবনে হিজাম (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি আল্লাহর রাসুলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, ইসলামপূর্ব যুগে আমি যেসব নেক কাজ করতাম, আমি কি তার কোনো প্রতিদান পাব? আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উত্তরে বললেন, আপনার সৎকর্মের কারণেই আপনি ইসলাম গ্রহনের সৌভাগ্য লাভ করেছেন। (সহিহ মুসলিম: ২২৩)

Advertisement

ঈমানের পর আমলের গুরুত্ব

আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা তার বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা মানুষের জীবনে ঈমানের অনিবার্য প্রভাব। যে যথাযথভাবে ঈমান এনেছে, আল্লাহকে নিজের স্রষ্টা, রব ও ইলাহ বলে বিশ্বাস করেছে, তার পক্ষে আল্লাহর ফরজ বিধান অমান্য করা সম্ভব নয়। আল্লাহর নিষেধ থাকার পরও গুনাহ করা সম্ভব নয়। তাই নেক আমল ঈমান থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু নয়।

মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাত লাভ করবে শুধু ঈমান নয়, বরং ঈমান ও নেক আমলের বিনিময়ে। আল্লাহ তাআলা বলেন, এই হল জান্নাত তোমাদেরকে যার উত্তরাধিকারী করা হয়েছে, কারণ তোমরা নেক আমল করেছিলে। (সুরা যুখরুফ: ৭২) আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, সুতরাং যে তার রবের সাক্ষাৎ কামনা করে, সে যেন নেক আমল করে এবং তার রবের ইবাদতে কাউকে শরিক না করে। (সুরা কাহাফ: ১১০)

তাই আল্লাহর তাআলার সন্তুষ্টি ও আখেরাতের পুরস্কার লাভের জন্য আমাদের কর্তব্য প্রথমত ঈমানকে সুদৃঢ় করার দিকে মনোযোগী হওয়া এবং ঈমানের দাবি হিসেবে নেক আমলের গুরুত্বও অনুধাবন করা। আল্লাহ তাআলা আমাদের তওফিক দান করুন!

Advertisement

ওএফএফ/এমএস