জাতীয়

তোফাজ্জল হত্যায় জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে: ডিএমপি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আরও যারা জড়িত আছে তাদেরকে গ্রেফতারে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

Advertisement

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

গত বুধবার মুসলিম হলের অতিথি কক্ষে ৩২ বছর বয়সী মানসিক ভারসাম্যহীন তোফাজ্জল হোসেন নির্যাতনের শিকার হন। কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ৬ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আর এ ঘটনায় আট ছাত্রের সংশ্লিষ্টতা পেয়ে বহিষ্কার করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

Advertisement

ডিসি তালেবুর রহমান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে শুরু থেকেই পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত ছিল। মামলার পর আমাদের ঊর্ধ্বতনরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন আমাদের কাছে ৬ জন ছাত্রকে সোপর্দ করেছে। তাদেরকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিছু ফাইন্ডিংস আমাদের জানিয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বাকি যারা জড়িত তাদেরকে গ্রেফতারে তৎপর।

তিনি বলেন, আমাদের তদন্ত চলমান, তদন্তে যদি আরও কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি।

যেসব পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে অনুপস্থিত তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা এখনও অনুপস্থিত, আপনারা জানেন আমাদের কিছু আইন ও বিধির মধ্যে চলতে হয়। চাকরিতে কিছু নিয়ম-কানুন আছে। সেই নিয়ম কাকুন বিধি অনুযায়ী যদি কেউ বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকেন তাহলে চাকরি বিধি মেনে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

Advertisement

অপর এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির এই মুখপাত্র বলেন, ঢাকার ২২টি থানা আংশিক বা পরিপূর্ণ ধ্বংস হয়েছে, সবমিলিয়ে ২১৬টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি অল্প সময়ে সংস্কার করে আগের পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার। আমরা সীমিত রিসোর্সের মাধ্যমে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি জনজীবনে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে।

ডিএমপির লুণ্ঠিত অস্ত্রের বিষয়ে এখনও হিসেব-নিকেশ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু অনেকগুলো স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমরা এখনও পরিপূর্ণ তথ্য পাইনি। এটার কাজ চলছে, শেষ হলে আপনাদেরকে পরিপূর্ণ তথ্য দিতে পারবো।

এদিকে, মোহাম্মদপুরে জোড়া খুনের ঘটনায় এক যুবক গ্রেফতার হয়েছে। শুক্রবার মোহাম্মদপুরে মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার বধ্যভূমি সংলগ্ন বেড়িবাঁধে নাসির বিশ্বাস (২৯) ও মুন্না (২২) নামে দুইজনকে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় মিরাজ মোল্লা নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

উপ-কমিশনার তালেবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় ভিকটিমের ভাই সুমন বিশ্বাসের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মোহাম্মদপুর থানায় রোববার একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি তদন্তকালে আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির সহায়তায় রোববারই মিরাজ মোল্লাকে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার মিরাজ মোল্লা এলাকার এলেক্স ইমন গ্রুপের সদস্য। এই গ্রুপ মোহাম্মদপুর এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মিরাজের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় আগের একটি মামলা রয়েছে।

নাসির হত্যার সঠিক কারণ উদঘাটন করতে ও অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার করতে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

টিটি/এসএনআর/জিকেএস