বিনোদন

ফ্যাসিস্ট ঠেকাতে ফারুকীর ‘গেগাসিরিয়াল’ ধারণা

ষোলো বছরের অপরাধের ফিরিস্তি তুলে ধরতে নতুন ধরনের চলচ্চিত্র বানানোর আইডিয়া দিলেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। জানালেন ভবিষ্যতের ফ্যাসিস্ট ঠেকাতে বিগত বছরগুলোর অপরাধ কীভাবে অডিও-ভিজ্যুয়ালে ধরে রাখতে হবে। হাজার এপিসোড ফুরিয়ে মেগাসিরিয়াল থেকে সেসব হবে গেগাসিরিয়াল। তবু এসব গল্প ফুরোবে না। এমনকি সেসব চলচ্চিত্র ধরনের ধারণাও দিয়েছেন এই চলচ্চিত্রকার।

Advertisement

মূলত সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদকে নিয়ে বানানো আল জাজিরার তথ্যচিত্র স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। যুক্তরাজ্যে ২৫০ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা) খরচ করে ৩৬০টি বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন জাভেদ। সম্প্রতি তার অর্থ পাচার নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

আল জাজিরার অনুসন্ধানী ওই প্রতিবেদনে জাভেদের সঙ্গে কথা বলতে শোনা যায় একটি সূত্রকে, যেখানে দেশের বাইরে অবস্থান করা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেই শোনা যায় তার ‘অট্টহাসি’। সেই ‘অট্টহাসি’ নিয়েই ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি লিখেছেন, ‘খ্যা খ্যা খ্যা খ্যা... আওয়ামী মন্ত্রী জাভেদের হাজার হাজার কোটি টাকা মানি লন্ডারিং এবং লন্ডনে ৩৬০টি বাড়ি নিয়ে আল জাজিরার ভয়াবহ ডকুমেন্টারিটা দেখার পরে অনেক কিছু মাথায় ঘুরছে আমার। কিন্তু সব প্রশ্ন-ক্ষোভ ছাপিয়ে আমার কানে এখনো বাজছে জাভেদের সেই খ্যাকখ্যাকে হাসি।’

ফারুকী লেখেন, ‘এই খ্যাকখ্যাকে হাসিটা হচ্ছে বাংলাদেশের প্রতি তাদের উপহাস। এই খ্যাকখ্যাকে হাসি জাবেদের একার না। এই খ্যাকখ্যাকে হাসি এস আলম গ্রুপের, শেখ হাসিনার, শেখ রেহানার, বেনজিরের, আজিজের, বেসিক বাচ্চুসহ হাজারে হাজার লুটেরার। এই হাসি, যারা গত ১৭ বছর দেশটাকে ফোকলা বানিয়েছে তাদের সবার। এই হাসি. ওইসব অফিসারের যারা শত শত মানুষকে গুম করেছে, খুন করেছে।’

Advertisement

তিনি লিখেছেন, ‘যারা বাবা হারিয়েছে, সন্তান হারিয়েছে, এই খ্যাকখ্যাকে হাসি তাদের কানে বর্শার ফলার মতো বিধঁছে। এই খ্যাকখ্যাকে হাসি বিডিআর বিদ্রোহে নিহত অফিসারদের পরিবারের কানে বর্শার ফলার মতো বিধঁছে।’

বিডিআর হত্যার তদন্তকারীর প্রসঙ্গ টেনে ফারুকী মনে করিয়ে দেন, ‘আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে কিছুদিন আগে তৃতীয় মাত্রার ইন্টারভিউতে বিডিআর হত্যার ঘটনা তদন্তের সমন্বয়ক ক্যাপ্টেন সুবায়েল বলেছিল, তাকে শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছিল তদন্ত রিপোর্ট পরিবর্তন করতে। পরিবর্তন না করায় সেনাবাহিনীর সেই সারভিং অফিসারকে শেখ হাসিনা ৩৪০ দিন গুম করে রাখে। ভাবতে পারেন রাষ্ট্র কোন জায়গায় গিয়েছিল? একে কি রাষ্ট্র বলা যেত? নাকি এটা কতিপয় মাফিয়ার লুটপাট, খুন, গুমের সিন্ডিকেটের মহোৎসব হয়ে উঠেছিল।’

আল জাজিরাকে ধন্যবাদ দিয়ে নতুন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফারুকী লেখেন, ‘এই সরকার এবং এরপরে যে সরকার নির্বাচিত হয়ে আসবে, দুই সরকারের প্রতি আমার আহ্বান, আপনারা এই ১৬ বছরের অপরাধের ফিরিস্তিগুলো তুলে ধরার ব্যবস্থা করেন অডিও ভিজ্যুয়াল মাধ্যমে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের বেদনার গল্পগুলো তুলে ধরেন। আমি জানি, এর সংখ্যা প্রচুর হবে, হাজার এপিসোড ফুরিয়ে যাবে তবুও এই ফিরিস্তি শেষ হবে না। কিন্তু আমাদের কাজ পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এই ডকুমেন্টেশনগুলা করে যাওয়া। এটা ফিকশন হতে পারে, ফিকশন এবং ডকুমেন্টারির মিশেল হতে পারে। এটা নানা হাইব্রিড ফরমেটে হতে পারে। এই কাজগুলো আমাদের করে যেতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কোনদিন কোন রাজনৈতিক দল, কোন রাজনৈতিক নেতা, কোনভাবে ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার সাহস আর না করে।’

আরএমডি/জিকেএস

Advertisement