দেশজুড়ে

মৃত্যুর ৫ বছর পর নিজ জন্মভিটায় সম্মান পেলেন কবি আল মাহমুদ

নিজের জন্মভিটা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদকে মৃত্যুর পাঁচ বছর পর নানা আয়োজনে স্মরণ করা হয়েছে। তার কবর জাতীয় পতাকায় আচ্ছাদিত করা হয়। দেওয়া হয় প্রতীকী গার্ড অব অর্নার।

Advertisement

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশসহ এসব কর্মসূচির আয়োজন করে কবি আল মাহমুদ গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতি পরিষদ। এতে বক্তব্য রাখেন পৌরসভার সাবেক মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন, কবি মহিবুর রহিম, কবি আল মাহমুদ গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতি পরিষদ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সভাপতি ইব্রাহিম খান সাদাত, সাধারণ সম্পাদক জিহাদ হোসেন লিটন প্রমুখ।

রাজনৈতিক কারণে মৃত্যুর পর যথাযথ সম্মান পাননি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষাসৈনিক কবি আল মাহমুদ। সে কারণে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাকে মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় সম্মান ও স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করার দাবি জানানো হয়।

২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন সোনালী কাবিনের কবি। মৃত্যুর পর ঢাকায় জাতীয়ভাবে যথাযথ সম্মান দিয়ে দাফনের চেষ্টা ব্যর্থ হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মোড়াইলে তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয় মরদেহ। পরে ১৭ ফেব্রুয়ারি জানাজা শেষে মোড়াইল গোরস্থানে অনেকটা নীরবে তাকে সমাহিত করা হয়।

Advertisement

কবি আল মাহমুদের সাহিত্যকর্ম নিয়ে গবেষণা ও স্মৃতি ধরে রাখার উদ্দেশ্যে সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গঠিত হয় কবি আল মাহমুদ গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতি পরিষদ। এর সভাপতি ইব্রাহিম খান সাদাত বলেন, পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী ৫২ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ও সম্মান গ্রহণ করলেও একজন প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষাসৈনিককে পতিত সরকার অপদস্থ করেছে। তিনি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে জাসদের মুখপত্র গণকণ্ঠের সম্পাদক থাকা অবস্থায় জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। আবার দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকায় কাজ করার কারণে তাকে প্রকৃত সম্মান থেকে বঞ্ছিত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আল মাহমুদ বাংলা একাডেমি ও একুশে পদকসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন। আমরা তাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দেওয়ার দাবি জানাই।

সমাবেশ শেষে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে মোড়াইল গোরস্থানে পৌঁছে। সেখানে প্রয়াত কবির কবর জাতীয় পতাকায় আচ্ছাদিত করা হয়। বিএনসিসির পক্ষ থেকে দেওয়া হয় প্রতীকী গার্ড অব অর্নার। এসময় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে কবির কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।

কবি আল মাহমুদ ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মৌড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

Advertisement

আবুল হাসনাত মো. রাফি/এসআর