খেলাধুলা

টাইগারদের কাছ থেকে আরও প্রতিরোধ আশা করেন সুজন

নতুন করে বলার দরকার নেই যে টেস্ট ক্রিকেটের সুদীর্ঘ ইতিহাসে কোন দল কখনোই ৪১৮ রানের বেশি করে জেতেনি। তাই চেন্নাই টেস্টে ভারত অধিনায়ক যখন বাংলাদেশকে ৫১৫ রানের হিমালয় সমান টার্গেট ছুঁড়ে দিলেন, তখনই টাইগার সমর্থকরা ধরে নিলেন, এটা অসম্ভব এক লক্ষ্য।

Advertisement

জসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ, আকাশ দিপ সিং, রবিচন্দ্রন অশ্বিন আর রবিন্দ্র জাদেজার সাজানো বোলিং লাইনআপের বিপক্ষে এ রান করা আকাশকুসুম কল্পনা।

নিশ্চিত পরাজয় ধরেই বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস দেখতে বসেছেন টাইগার সাপোর্টাররা। তারা সবাই আশায় বুক বেঁধেছেন, শান্তর দল হাতে থাকা আড়াই দিনের অন্তত দেড়দিন ব্যাটিং করুক এবং যত বেশি সময় সম্ভব উইকেটে কাটিয়ে একটা প্রতিরোধ গড়ে তুলুক।

বাংলাদেশ ভক্ত ও সমর্থকদের সে প্রত্যাশার সাথে মিল রেখেই আশায় বুক বেঁধেছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। ১১ বছর বোর্ড পরিচালক থাকার পর কিছুদিন আগে পদত্যাগ করা জাতীয় দলের এ সাবেক অধিনায়কের আশা, শান্ত বাহিনী যেন প্রতিরোধ গড়ে তোলে। যতবেশি সময় ধরে ব্যাট করা যায়, তাই করে দেখায়।

Advertisement

সুজন খুব ভাল জানেন, এ হিমালয় সমান লক্ষ্য ছোঁয়া সম্ভব না। বিসিবির সাবেক গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটি চেয়ারম্যান কোন লক্ষ্যও নির্ধারণ করতে চান না। তার সোজা কথা, ‘৩০০-৪০০ করলে আমি খুশি, তা বলবো না। রানের আলোকে চিন্তা করতে চাই না আমি। আমার আশা, লম্বা সময় ব্যাটিং করুক শান্ত, সাকিব, লিটন ও মিরাজরা।’

আজ শনিবার তৃতীয় দিন বাংলাদেশের পারফরমেন্সের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে সুজন বলেন, ‘আমরা যে জায়গায় শেষ করলাম, রানের বিবেচনায় সেটা ঠিকই আছে। তবে উইকেট ২টা কম পড়লে ভাল হতো। এই রানটা ২ উইকেটে হলে বলতাম খুব ভাল জবাব। অন্তত একটি উইকেট কম পড়লেও ভালই বলা যেত। এখন ঠিক ভাল বলতে পারছি না। বলা যায় না। আসলে আমরা ভাল ব্যাটিং করিনি। উইকেট বেশ ভাল ছিল। ভারতীয় পেসারদের বলে বিপজ্জ্বনক ম্যুভমেন্ট বা সুইং ছিল না। আবার স্পিনারদের বলও সেভাবে টার্ন করেনি। এক কথায় ব্যাটারদের জন্য তেমন কোন অস্বস্তির কারণ ছিল না; কিন্তু সে অনুযায়ী আমাদের ব্যাটিং ভাল হয়নি।’

কেন ৪ উইকেট পড়লো? সাদমান ও জাকির দুই ওপেনার ৩০-এর ঘরে পুরো সেট হয়ে আউট হয়েছেন। মুমিনুল হক আর মুশফিকুর রহিম দু’অংকে পৌঁছানোর পরপরই অফস্পিনার অশ্বিনের বলে সফট ডিসমিসাল; এটা কি ব্যর্থতা, না ভারতের খুব ভাল ও ধারালো বোলিংয়ের সফলতা?

এ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে সুজন বলেন, ‘ভারতের কোয়ালিটি বোলিংতো অবশ্যই আছে। আপনি পাকিস্তানের সাথে ভারতের বর্তমান বোলিংয়ের কোন তুলনাই করতে পারবেন না। পাকিস্তানে আমরা যে দুই টেস্টের সিরিজে একচেটিয়া জিতলাম, খুব ভাল ব্যাটিং করলাম, চাপের মুখে খাদের কিনারায় পড়ে গিয়েও বড় জুটি গড়ে সে ধাক্কা সামলে আবার সামনে এসে ম্যাচ জিতেছি- সেটা ভারতের সাথে করা কঠিন।’

Advertisement

‘প্রথম কথা পাকিস্তানে কোন স্পিনারই ছিল না। সেখানে ভারতে তিন তিন জন খুব দ্রুত গতির সুইং বোলারের পাশাপাশি দু’জন হাই কোয়ালিটি স্পিনার আছেন। যে কারণে ভারতের বোলিং মোকাবিলা অনেক কঠিন। সবাই হাই কোয়ালিটি বোলার। প্রত্যেকের বলে কাজ আছে। একজনের পর একজন আসতেই থাকে। কাউকে একটু স্বস্তি নিয়ে সাবলীল ও স্বচ্ছন্দে খেলা খুব কঠিন। তাই ভেতরে একটা অস্বস্তি কাজ করে। সে কারণেই ব্যাটারদের কাজ অনেকটা কঠিন। তারপরও আমরাও ভাল ব্যাটিং করিনি। অ্যাপ্রোচটা আরও ভাল হতে পারতো। ব্যাটিংটা ভাল হতে পারতো। তিনটা সফট ডিসমিসাল। এটা এমন সময়ে ঠিক প্রত্যাশিত নয়।’

এআরবি/আইএইচএস