আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, বিচারক, সরকারি চাকরিজীবীরা কি আমাদের দায়িত্ব পালন করেছিলাম। প্রশ্নটি আপনাদের কাছে রেখে গেলাম, আমার কাছেও রেখে দিলাম।
Advertisement
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের ইনার গার্ডেনে প্রধান বিচারপতির অভিভাষণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অথিতির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, বিচার বিভাগ সংস্কার সংক্রান্ত কমিশনের চেয়ারম্যান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও অধস্তন আদালতের বিচারকরা।
আসিফ নজরুল বলেন, এক হাজার মানুষ শহীদ হয়েছেন, ৩০ হাজার আহত হয়েছেন। চোখ হারিয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন অনেকে। এত রক্তের বিনিময়ে উপমহাদেশের কোনো স্বৈরশাসককে পরাজিত করতে হয়নি।
Advertisement
তিনি বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, বিচারক, সরকারি চাকরিজীবীরা কি আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি?
এসময় তিনি আগের প্রধান বিচারপতির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। বিচার বিভাগে যদি এমন প্রধান বিচারপতি থাকেন যিনি ছাত্র আন্দোলনরত ছাত্রদের উপহাস করেন !
অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, বিচার বিভাগে যদি এমন প্রধান বিচারপতি থাকেন, ছাত্র সংগঠন থেকে ফুলের শুভেচ্ছা নেন, পুলিশের একজন বিকৃত কর্মকর্তার কাছ থেকে তরবারি নেন। যদি বিচার বিভাগে এমন প্রধান বিচারপতি থাকেন যিনি ছাত্র আন্দোলনরত ছাত্রদের উপহাস করেন। যদি এমন কোনো প্রধান বিচারপতি থাকেন টকশোর বক্তব্যের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয় কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
তিনি বলেন, বিচারপতির দায়িত্ব মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা করা, আর তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন কেন তার মৌলিক অধিকার ভ্রষ্ট করা হচ্ছে না, লঙ্ঘন করা হচ্ছে না, গ্রেফতার করা হচ্ছে না। বিচার বিভাগে যদি এমন কোনো বিচারক থাকেন তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এত খারাপ অভিযোগ যে এই বিচারকের এই ঘটনায় বদনাম আছে।
Advertisement
বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা গ্রহণযোগ্য নয় বলেও মন্তব্য করেন আসিফ নজরুল। বিচার বিভাগকে সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হওয়া উচিৎ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনাদের দায়িত্ব নিতে হবে।
বিচার বিভাগের সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এরই মধ্যে কমিশন গঠন করা হয়েছে। আমরা প্রকৃত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। ঢালাও মামলা করে মানুষ হয়রানি থেকে বের হতে চাই।
আসিফ নজরুল বলেন, গরিব দেশে সবচেয়ে বেশি থাকবে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট। এখন যারা ব্যক্তিগত গাড়ি পাচ্ছে, আমি তা সমর্থন করি না। আমি নিজেও গাড়ি চাইনি। নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় গাড়িতে চড়তে আমাকে বাধ্য করা হয়েছে।
এফএইচ/এমআইএইচএস/জেআইএম