অর্থনৈতিক বৈষম্য নিরসনে সংস্কার কমিশন গঠন, সংবিধানে সামাজিক মালিকানার স্বীকৃতি ও অর্থব্যবস্থার ৮ দফা সংস্কার প্রস্তাবনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন ও আলোচনা সভা করেছে ফোরাম ফর ইকোনমিক জাস্টিস (ফিজা)।
Advertisement
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ফিজার অহ্বায়ক ফররুখ খসরুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সদস্য সচিব মোহাম্মদ সেলিম হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নূর আলম, ড. ফোরকান উদ্দিন আহমেদ, তপন কুমার নাথ, ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার, মুশরিকুল ইসলাম শিমুল, আশরাফুল ইসলাম আশু প্রমুখ।
সংগঠনের যুব সচিব শাহরিয়ার ইসলাম শোভনের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক গোলাম রহমান, যুব সংগঠক মো. জিল্লুর রহমান, হাবিবুর রহমান, মোসাম্মৎ রিমা, তাপসী রাবেয়া প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার ছাড়া সুশাসন অসম্ভব। প্রচলিত মালিকানাভিত্তিক অর্থব্যবস্থা বহাল রেখে কখনোই বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব নয়। তাই সমাজের প্রতিটি স্তরে সম্পদের স্বত্ব বা মালিকানায় জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং অংশীজনের মধ্যে ন্যায্য হারে মুনাফার বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে। ন্যায়ভিত্তিক মুনাফার বণ্টন নিশ্চিত করতে উৎপাদনে শ্রমিকের মালিকানা, লভ্যাংশের অংশীদারত্ব ও প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।
Advertisement
ব্যক্তি মালিকানাধীন পুঁজিবাদ সামাজিক শোষণ ও অনাচারের মূল কারণ। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সমাজতন্ত্র রাষ্ট্রীয় শোষণ ও অনাচারের উৎস এবং সামাজিক ব্যবসা হলো ক্ষয়িষ্ণু ব্যক্তিকেন্দ্রিক পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখার নতুন কৌশল। দরিদ্র অসহায় মানুষকে ক্ষুদ্র ঋণ বা সামাজিক ব্যবসা’র ফাঁদে ফেলে পুঁজিবাদ তার শোষনমাত্রাকে প্রশমিত করে টিকে থাকার অপচেষ্টায় আরও সচেষ্ট।
সংবাদ সম্মেলনে ফোরাম তাদের ৮ দফা অর্থনৈতিক সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরে জানায়, মৌলিক চাহিদাসমূহকে অলাভজনক পণ্য ঘোষণা করতে হবে। অবিলম্বে উৎপাদন ও সেবা খাতে সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৮ দফায় ব্রিটিশ বেনিয়া কোম্পানি আইন বাতিল করে অংশীগণের সমন্বয়ে প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যবসা ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা করার কথা বলা হয়। এছাড়া সোনাকে মূল ভিত্তি ধরে মুদ্রা ব্যবস্থাপনা ও নির্ধারিত মেয়াদ সম্বলিত মুদ্রার প্রবর্তন করার জন্য দাবি জানানো হয়। প্রচলিত কর ব্যবস্থাকে নিপীড়নমূলক আখ্যায়িত করে ফোরাম। তারা কর ব্যবস্থার সংস্কারের আহ্বান জানিয়ে বলে, ৮৭.৫ গ্রাম ২৪ ক্যারেট সোনার সমপরিমান আয় এবং সম্পদের মালিকানার ভিত্তিতে সমহারে আয়কর ও সম্পদকরের সীমা নির্ধারণ করতে হবে যার পরিমাণ হবে মোট আয় ও সম্পদের শতকরা ৫ ভাগ। এছাড়াও ঋণের পরিমাণ বাদ দিয়ে সম্পদ মূল্যের বাকি অংশ করের আওতাভুক্ত করার দাবি জানায় ফোরাম। যেখানে ঋণ অংশের কর পরিমাণ ঋণদাতা বহন করবেন।
৮ দফায় সুদবিহীন ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ‘টাকার প্রকৃত মূল্য’ অনুযায়ী ঋণের লভ্যাংশ নির্ধারণ এবং মৌলিক চাহিদা পূরণে রাষ্ট্রীয় জামানতে মুনাফাবিহীন ঋণ ব্যবস্থা চালুর আহ্বান জানানো হয়।
Advertisement
এনএইচ/এসআইটি/জেআইএম