মতামত

বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সংকট মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্যের গুরুত্ব

  জাতীয় ঐক্য এবং প্রয়োজনীয়তা

জাতীয় ঐক্য বলতে আমরা দেশের জনগণের মধ্যে সকল রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক বিভেদ ভুলে, দেশের সর্বজনীন স্বার্থে এবং সংকটে দেশপ্রেমের ভিত্তিতে একত্রিত হয়ে দেশের উন্নতির জন্য এবং দেশ রক্ষার জন্য কাজ করাকে বুঝি। বর্তমান দেশের এই নাজুক সময়ে সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভক্তি, রাজনৈতিক সংকট এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে দল মত নির্বিশেষে একটি শক্তিশালী জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে দেশের দীর্ঘমেয়াদি সমস্যাগুলোর সমাধান যেমন দুর্নীতি, বৈষম্য, রাজনৈতিক অস্থিরতা, এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়ন সম্ভব।

Advertisement

যখন মানুষ একত্রিত হয়, তখন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে এবং জনগণের চাহিদাগুলো পূরণ করতে সরকারের উপর চাপ তৈরি হয়। এ ছাড়া দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে জাতীয় ঐক্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সর্বোপরি বৈদেশিক সম্পর্ক উন্নয়নে এবং দেশের সংকট মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

জাতীয় ঐক্যের বর্তমান বাস্তবতা ও এর প্রভাব

বাংলাদেশে জাতীয় ঐক্যের জন্য ঐতিহাসিক, সমাজতান্ত্রিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও বৈশ্বিক বাস্তবতা উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। এ সকল বাস্তবতা গঠনে দেশের অতীত অভিজ্ঞতা, বর্তমান চ্যালেঞ্জ এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট সবই গুরুত্বপূর্ণ। ১। ঐতিহাসিক বাস্তবতা: বাঙালির ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ জাতীয় ঐক্যের সবচেয়ে শক্তিশালী উদাহরণ। পাকিস্তানের শাসনামলে বাঙালি জাতির ওপর হওয়া শোষণ ও অবিচার জাতিকে একত্রিত করেছিল। তবে স্বাধীনতার পর, বিশেষত রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং ক্ষমতার লড়াই ঐক্য বিনষ্ট করেছে। দেশের ইতিহাসে সামরিক শাসন এবং পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতা ঐক্য পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথে বড় বাধা হিসেবে কাজ করেছে। তবে সাম্প্রতিক ছাত্রজনতার আন্দোলনে জাতীয় ঐক্যের একটা নতুন রুপ আমরা প্রত্যক্ষ করেছি।

২। অর্থনৈতিক বাস্তবতা: দরিদ্র বান্ধব অর্থনীতি না থাকায় দেশের একটি বড় অংশ দরিদ্র সীমার নিচে বাস করছে, যেখানে ধনী শ্রেণি আরো বেশি ধনী এবং প্রভাবশালী হচ্ছে। এই বৈষম্য, টেকসই এবং জনগণ বান্ধব উন্নয়নের পথ রুদ্ধ করে এবং একই সাথে জাতীয় ঐক্যের পথে বাধা সৃষ্টি করে। বিশেষত, গ্রাম এবং শহরের মানুষের মধ্যে বৈষম্য জাতীয় ঐক্যকে দুর্বল করছে। শহরাঞ্চলে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও, গ্রামাঞ্চলের অনেক মানুষ এখনো মৌলিক সেবার ঘাটতিতে ভুগছে। দুর্নীতি, ক্ষমতার লোভ, উন্নয়নের অসামঞ্জস্যতা এবং ধনী-গরীবের মধ্যে সম্পদ বন্টন বৈষম্যে সামাজিক বিভেদকে গভীর করেছে, যা ঐক্য প্রতিষ্ঠাকে কষ্টসাধ্য করেছে।

Advertisement

৩। রাজনৈতিক বাস্তবতা: বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা জাতীয় ঐক্যের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে। রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে দীর্ঘকালীন শত্রুতা এবং পারস্পরিক অবিশ্বাস জাতিকে বিভক্ত করে এবং একই সাথে এই রাজনৈতিক বিভেদ জনগণের মধ্যে ঐক্যের অভাব তৈরি করে। তাছাড়া, রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাঝে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা, সহযোগিতার অভাব এবং ক্ষমতার লড়াই দেশের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। নির্বাচনের সময় সহিংসতা এবং রাজনৈতিক সহিংসতা জাতীয় ঐক্যের পথে বাধা সৃষ্টি করে। বিরোধী দলের প্রতি দমননীতি, মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা এবং জবাবদিহিতার অভাব রাজনৈতিকভাবে জাতিকে বিভক্ত করেছে।

৪। সুশাসনের অভাবঃ সুশাসনের অভাব জাতীয় ঐক্যকে বিঘ্নিত করে। সুশাসন বলতে আমরা সাধারণত বুঝি ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, এবং আইন মেনে প্রশাসন পরিচালনা করা। সুশাসনের অভাবে সাধারণ মানুষ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। শাসকগোষ্ঠী প্রভাবশালী গোষ্ঠীগুলোর প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখালে, অর্থনৈতিক বৈষম্য ও সামাজিক অসাম্য বেড়ে যায়। এর ফলে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ এবং বিদ্বেষের সৃষ্টি হয়, যা জাতীয় ঐক্যকে দুর্বল করে। যদি সরকারের কার্যক্রমে জবাবদিহিতা না থাকে, জনগণের আস্থা হারায়। দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার বৃদ্ধি পেলে সাধারণ মানুষ তাদের প্রতিনিধি ও প্রশাসনের প্রতি বিশ্বাস হারায়। এতে দেশের ভেতরে অনাস্থা বাড়ে, যা জাতীয় ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

৬। বৈশ্বিক বাস্তবতা: বৈশ্বিক বাস্তবতায়, বাংলাদেশ এখন বৈশ্বিক অর্থনীতির একটি অংশ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক শক্তি ও প্রভাব দেশের নীতি নির্ধারণে ভূমিকা পালন করছে। বৈশ্বিক বাণিজ্য, অভিবাসন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ভূ-রাজনৈতিক কৌশলগুলো বাংলাদেশের জাতীয় ঐক্য গঠনে প্রভাব বিস্তার করে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা এবং আঞ্চলিক কৌশলগত পদ্ধতিগত জাতীয় ঐক্য গঠনে জটিলতা তৈরি করে।

৭। ভারতের প্রভাব: বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব অনেক সময় বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে। কেউ কেউ মনে করেন যে ভারতের অতিরিক্ত প্রভাব বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ফলে দেশের মধ্যে একটি অংশের মধ্যে জাতীয় স্বার্থ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে, যা ঐক্যের ভিত্তি দুর্বল করে।

Advertisement

বাংলাদেশে জাতীয় ঐক্যের অভাব এর কারন

•রাজনৈতিক বিভাজন: দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী বিভাজন রয়েছে, যা জাতীয় ঐক্য গড়তে বাধা সৃষ্টি করে। প্রতিটি দল নিজের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়, ফলে জাতীয় স্বার্থ পেছনে পড়ে যায়।

•ধর্মীয় ও সামাজিক বৈচিত্র্য: বাংলাদেশ একটি ধর্মীয় ও সামাজিক বৈচিত্র্যময় দেশ। যদিও এ বৈচিত্র্য দেশের সম্পদ হতে পারে, রাজনৈতিকভাবে এটি মাঝে মাঝে বিভাজন সৃষ্টি করে, বিশেষ করে যখন ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

•অসাম্য ও বৈষম্য: সমাজে ধনী-গরীবের মধ্যে ব্যাপক বৈষম্য রয়েছে। সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, ফলে সমাজে জাতীয় ঐক্য গড়ে ওঠা কঠিন হয়ে পড়ে।

•গণমাধ্যমের ভূমিকা: অনেক সময় গণমাধ্যম রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক হয়ে পড়ে, ফলে জনগণের মধ্যে বিভাজন বৃদ্ধি পায়। একে কেন্দ্র করে গুজব এবং ভ্রান্ত ধারণা ছড়িয়ে পড়তে পারে।

•বিশ্বাসঘাতকতা: ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্তরে বিশ্বাসঘাতকতা মানুষের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি করে। এটি দল বা সমাজের মধ্যে একে অপরের প্রতি নির্ভরতা কমিয়ে দেয় এবং একত্রে কাজ করার মানসিকতাকে বাধাগ্রস্ত করে।

•পরশ্রীকাতরতা: অন্যের সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হওয়া এবং সেটাকে ছোট করার মানসিকতা সমাজের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করে। এতে সমন্বয় ও সহযোগিতার পরিবেশ নষ্ট হয়, যা জাতীয় ঐক্য গড়তে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

•দেশপ্রেমের অভাব: যখন ব্যক্তিরা দেশের চেয়ে নিজের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়, তখন জাতীয় স্বার্থ উপেক্ষিত হয়। দেশের প্রতি আনুগত্য ও দায়িত্ববোধের অভাব জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিকে দুর্বল করে তোলে।

•ক্ষমতার দ্বন্দ্ব: রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ক্ষমতা দখলের লড়াই প্রায়শই সহিংসতায় রূপ নেয়। ক্ষমতার দ্বন্দের ফলে রাজনৈতিক সংঘাত বাড়ে এবং দেশের সাধারণ জনগণের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হয়। এই ক্ষমতার দ্বন্দ্বে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত, অনাস্থা এবং অস্থিতিশীলতা বাড়ে, যা জাতীয় ঐক্যের জন্য ক্ষতিকর।

জাতীয় ঐক্য গঠনে করণীয়১। দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে দেশপ্রেমের মূল্যবোধ: সব রাজনৈতিক দল এবং নাগরিকদের মধ্যে দেশপ্রেমের একটি সমন্বিত মূল্যবোধ তৈরি করতে হবে। এর জন্য শিক্ষাক্ষেত্রে, গণমাধ্যমে, এবং বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যের গুরুত্ব তুলে ধরা প্রয়োজন।

২। সুশাসন প্রতিষ্ঠা: সুশাসন এবং আইনের শাসন নিশ্চিত করা হলে জনগণের আস্থা বাড়বে। সরকারের দায়িত্বশীলতা এবং স্বচ্ছতা জাতীয় ঐক্য গঠনের ভিত্তি হতে পারে।

৩। সবার জন্য ন্যায়বিচার ও সমান সুযোগ: জাতীয় ঐক্য তখনই সম্ভব যখন প্রতিটি নাগরিকের ন্যায়বিচার ও সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হয়। বৈষম্য এবং অন্যায় থেকে সমাজকে মুক্ত করতে হলে অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রগুলোতে সমান সুযোগের ব্যবস্থা করতে হবে।

৪। যুবসমাজের অংশগ্রহণ: যুবসমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে এই জাতীয় ঐক্য গঠনে। তাদের উদ্যম, উদ্যোগ এবং সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে একটি শক্তিশালী ভবিষ্যৎ গঠন সম্ভব, যেখানে সাম্য, ন্যায়বিচার এবং গণতন্ত্র থাকবে।

৫। গণমাধ্যম ও সিভিল সোসাইটির ভূমিকা: গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং দায়িত্বশীল সিভিল সোসাইটির অংশগ্রহণও জাতীয় ঐক্য গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তাদের মাধ্যমে সঠিক তথ্য পৌঁছানো এবং সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া যায়।

৬। অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতি: রাজনীতিবিদদের উচিত দলমতের ঊর্ধ্বে থেকে দেশের সার্বিক কল্যাণের জন্য কাজ করা। রাজনীতি যদি ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বার্থের চেয়ে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়, তবে জনগণের মধ্যে ঐক্যের ভিত্তি তৈরি হতে পারে।

৭। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা: গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে রাজনৈতিক নেতারা এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে পারেন, যেখানে প্রত্যেক নাগরিকের মতামত সম্মানিত হবে। এর ফলে জনগণের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা বাড়বে এবং জাতীয় ঐক্য মজবুত হবে।

৮। দলীয় বিভেদ নিরসনে নেতৃত্বের দায়িত্ব: রাজনৈতিক বিভক্তি সবসময় থাকবে, তবে নেতৃত্ব যদি দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়, তবে দলীয় বিভেদ জাতীয় ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না। রাজনৈতিক নেতাদের উচিত জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য পারস্পরিক সমঝোতা এবং সহনশীলতার সংস্কৃতি গড়ে তোলা।

৯। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ: দুর্নীতি সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভেদ সৃষ্টি করে এবং জনগণের মধ্যে হতাশা তৈরি করে। সৎ ও স্বচ্ছ রাজনৈতিক নেতৃত্ব দুর্নীতি নির্মূলে কার্যকর পদক্ষেপ নিলে জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পায় এবং জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি মজবুত হয়।

১০। জাতীয় সংকটে একত্রিত হওয়া: দেশের সংকটময় সময়ে রাজনৈতিক নেতারা যদি দলীয় বিভেদ ভুলে গিয়ে জাতীয় স্বার্থে এক হয়ে কাজ করেন, তবে তা জনগণের মধ্যে ঐক্যের বার্তা পৌঁছায়। উদাহরণস্বরূপ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় রাজনৈতিক নেতাদের একতাবদ্ধ পদক্ষেপ জনগণের আস্থা ও সহযোগিতা বাড়ায়।

১১। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ইতিহাসকে গুরুত্ব দেওয়া: বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাতীয় ঐক্যের একটি বড় উৎস। রাজনৈতিক নেতারা যদি এই চেতনাকে সঠিকভাবে ধরে রাখেন এবং এর ভিত্তিতে দেশকে এগিয়ে নিতে সচেষ্ট হন, তবে তা জাতীয় ঐক্যের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

জাতীয় ঐক্যই হলো যে কোনো দেশের উন্নয়নের মূল ভিত্তি। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক, সামাজিক, এবং অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা আজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিভেদ, বৈষম্য এবং সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থকে পেছনে ফেলে, দেশপ্রেমের ভিত্তিতে জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ছাত্রজনতার আন্দোলনের বৈপ্লবিক মহাত্ব, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সামনে রেখে এগিয়ে গেলে আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সমৃদ্ধ, ন্যায়সংগত, এবং ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব। পরিশেষে, আমেরিকান রেভিলিউশনারি যুদ্ধে জন ডিকিন্সন এর বিখ্যাত গান জাতীয় ঐক্যের জন্য প্রানিধানযোগ্যঃ “Then join hand in hand, brave Americans all, By uniting we stand, by dividing we fall.”- The Liberty Song (1768)

লেখক: অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা।

এইচআর/এমএস