কুমিল্লার বুড়িচংয়ে গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে সৃষ্ট সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগ সড়কগুলো মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। পাঁচ ইউনিয়নের প্রায় ১৫৬টি কাঁচা-পাকা মিলিয়ে ১৬০ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার সড়ক ভেঙে গেছে। ক্ষতি হয়েছে চারটি কালর্ভাটও। এতে প্রায় শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এতে স্থানীয়রা চরম ঝুঁকি নিয়ে দুর্গত এলাকায় চলাচল করছে। যানচলাচল বন্ধ রয়েছে কাঁচা-পাকা অনেক সড়কে। এছাড়া সামান্য বৃষ্টি হলেই বেহালদশায় পরিণত হয় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো। এতে অসুস্থ, বৃদ্ধ ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
Advertisement
সরেজমিনে দেখা যায়, বন্যার পানিতে বিভিন্ন সড়কের পিচ উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও ৫-১০ ফুট মাটি সরে বন্ধ রয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি নানুয়ার বাজার-মহিষমারা-শিকারপুর বুরবুড়িয়া সড়ক। এ সড়কে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছে।
বুরবুড়িয়া গ্রামের মাজহারুল ইসলাম, আনোয়ার ও আবুল কাশেমসহ একাধিক বাসিন্দা বলেন, বন্যায় আমাদের এলাকায় সড়কের অবস্থা খারাপ। স্বাভাবিকভাবে চলাফেরায় অনেক কষ্ট হচ্ছে। একদিকে যাতায়াত সমস্যা অন্যদিকে আর্থিক অনটন- দুই মিলে মানুষের সমস্যা হচ্ছে। যাতায়াত সমস্যার কারণে অসুস্থ মানুষকে চিকিৎসা দিতে জেলা সদরে পৌছাতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। জরুরিভিত্তিতে সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক।
এছাড়া বুড়িচং-রাজাপুর-শংকুচাইল সড়কের বিভিন্ন অংশ, নানুয়ার বাজার-ইন্দ্রবতী, ভেড়াজাল-শিকাপুর-বুরবুড়িয়া মাজার এলাকাসহ বিভিন্ন সড়কে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার প্রয়োজন।
Advertisement
অপরদিকে খাড়াতাইয়া, শিকারপুর, জরুইন, হরিপুর, বাকশীমূল-কালিকাপুর এলাকার সড়কগুলো স্থানীয় যুবকরা ইট ফেলে কোনোমতে চলাচলের উপযোগী করেছেন।
ষোলনল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, আমাদের এলাকার রাস্তাগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলা সদরের যাওয়ার একমাত্র সড়কটি বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে গেছে। সাধারণ মানুষের চলাচলের উপযোগী করতে অর্থের প্রয়োজন।
বুড়িচং সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদী বলেন, এবছর বন্যায় বুড়িচংয়ে বিভিন্ন সড়কগুলো যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে ইতিহাস হয়ে থাকবে। এখনো অনেক ইউনিয়নের সঙ্গে উপজেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ নেই। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো দ্রুত সংস্কার করা হলে মানুষ স্বাভাবিক জীবনে কিছুটা হলেও ফিরে আসবে।
এ ব্যাপারে এলজিইডির বুড়িচং উপজেলা প্রকৌশলী আলিফ আহাম্মেদ বলেন, বন্যায় উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ১৫৬টি সড়কের ক্ষতি হয়েছে। সড়কগুলো মেরামতের কাজ জরুরি ভিত্তিতে হাতে নেওয়া হয়েছে।
Advertisement
জাহিদ পাটোয়ারী/জেডএইচ/জিকেএস