নেত্রকোনা শহরের একটি কসমেটিকসের দোকানে মনিটরিংয়ের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ওপর হামলা অভিযোগ উঠেছে দোকান মালিক ও কর্মচারীদের বিরদ্ধে।
Advertisement
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শহরের বড়বাজার এলাকায় বাজার মনিটরিং ও ভোক্তা অধিকারের অভিযান চলাকালীন এ ঘটনা ঘটে।
এসময় সমন্বয়কদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে হামলাকারীদের মধ্য থেকে শুভ্র নামের একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। তবে আটক শুভ্র নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করেন। পরে মালিক সমিতির উপস্থিতিতে সতর্ক করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। জানা গেছে, নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করা শুভ্র বড়বাজারের নন্দিতা কসমেটিকসের দোকানদার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা ভোক্তা অধিকারকে জানান, বিএসটিআই অনুমোদনহীন, চোরাই পথে আসা নিষিদ্ধ পণ্য কসমেটিকসের দোকানে বিক্রি হয়। পরে দুপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও সমন্বয়করা বাজার মনিটরিংয়ে যান। সৈকত স্টোর নামের একটি দোকানে অভিযান চালালে সেখানে নিষিদ্ধ চোরাই পণ্যসহ বিএসটিআইয়ের লোগোহীন কিছু পণ্য পাওয়া যায়। এ ঘটনায় ভোক্তা অধিকার দোকান মালিককে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
Advertisement
বড়বাজার এলাকার সব কসমেটিকস দোকানের মালিক ও কর্মচারীরা এসে সমন্বয়কদের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন তারা। এর মধ্যে নারী শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় সেনাবাহিনী। তাদের উপস্থিতিতেও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করের দোকান মালিকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে শুভ্র নামের একজনকে সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পে নেওয়া হয়।
কয়েকজন সমন্বয়কের বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরেই নেত্রকোনার কসমেটিকস বাজারে অনিয়মের বিষয়টি জেনে আসছি। আজ দুপুরে ভোক্তা অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা বাজার মনিটরিংয়ে যাই। ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সৈকত স্টোরে অবৈধ, ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং চোরাই পণ্য পাওয়ায় জরিমানা করেন। এরপরই অন্য দোকানি ও কর্মচারীরা আমাদের ওপর হামলা করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কসমেটিকস দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ঝন্টু সাহা বলেন, ‘আমি সেনা ক্যাম্পে আছি। পরে কথা বলবো।’
নেত্রকোনা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক আব্দুস ছালাম বলেন, ‘আমরা বাজার মনিটরিংয়ে গিয়ে প্রথমে সৈকত স্টোর নামের একটি দোকানে অভিযান পরিচালনা করি। সেখানে নিষিদ্ধ ও অবৈধ পথে আনা পণ্য পাওয়া যায়। পরে দোকান মালিককে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তখন ওই মার্কেটে দোকানের লোকজন এসে সমন্বয়কদের ওপর হামলা করেন। আমরা এবং পথচারীরা তাদের থামানোর চেষ্টা করি।’
Advertisement
নেত্রকোনা অস্থায়ী সেনাবাহিনী ক্যাম্পের মেজর জিসানুল হায়দার বলেন, ‘সমন্বয়কদের ওপর হামলার খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। একজনকে ক্যাম্পে এনে দোকান মালিকদের উপস্থিতিতে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে।’
এইচ এম কামাল/এসআর/এমএস