বিনোদন

লাইভে কেঁদে কেঁদে যা বললেন জ্যোতি

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির গবেষণা বিভাগের পরিচালক অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতিকে অফিসকক্ষে আটকে দেওয়া হয়েছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। আজ (১৭ সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার হঠাৎ করেই ফেসবুকে ছড়াতে শুরু করে ঘটনাটি। পরে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে কেঁদেছেন জ্যোতিকা জ্যোতি।

Advertisement

আজ মঙ্গলবার সকালে অফিসে যাওয়ার পর সহকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন জ্যোতি। এ ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। পরে লাইভে অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি জানান, অফিসের পরিচিত মুখগুলোকে তার খুব অপরিচিত লাগছিল।

আরও পড়ুন: পদত্যাগ করতে যাচ্ছে অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাহী কমিটি শিল্পীসংঘের উপদেষ্টা পরিষদের পদত্যাগ চান অভিনয়শিল্পীরা

লাইভে জ্যোতি বলেন, ‘চলমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে আমাকে অফিসে যেতে বারণ করা হয়েছিল। তাই আমি বাসাতেই ছিলাম। একপর্যায়ে ভাবলাম, আমার যেহেতু চাকরি আছে, আমি কেন যাব না! যদিও সচিব স্যারের পরামর্শ ছিল না যাওয়ার। তবে আমি আজ অফিসে গিয়েছিলাম। প্রথমে বিষয়টি বুঝতে পারিনি। বাইরে কয়েকজন সহকর্মীকে উত্তেজিত অবস্থায় দেখেছি। আমাদের আরেকজন পরিচালক আছেন, তারা আমাকে ব্যাপারটা বলেছেন। আমাদের মহাপরিচালক মিটিংয়ে ছিলেন। তার সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিতাম আমি। দেখা করতে গেলে তিনি পরিস্থিতি দেখিয়ে বলেন, এই অবস্থায় কেন আসছেন আপনারা? এগুলো আমাকে সামলাতে দেন। তারপর যে সিদ্ধান্ত হয়, হবে। আপনারা চলে যান।’

ফেসবুক লাইভে কথাগুলো বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন জ্যোতিকা জ্যোতি। তিনি বলেন, ‘মহাপরিচালক যেহেতু আমাদের বলেছেন, আমরা অবশ্যই চলে যাব। আমি আমার রুমে গিয়ে নিজের ব্যক্তিগত জিনিস ব্যাগে ভরি। তারপর লবিতে গিয়ে বাইরের লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে চাই। কিন্তু তারা কথা বলতে চান না। ওই মুখগুলো আগে পরিচিত ছিল, সেই মুখগুলো আজ খুব অপরিচিত লাগছিল।’

Advertisement

গত বছরের মার্চ মাসে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক পদে যোগ দিয়েছিলেন অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর আজ নিজ কর্মস্থলে গেলে সহকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন এই অভিনেত্রী, জানিয়েছে শিল্পকলার একটি সূত্র। একপর্যায়ে শিল্পকলা একাডেমি ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।

বহুল আলোচিত ‘আলো আসবেই’ হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপের অন্যতম সদস্য ছিলেন জ্যোতিকা জ্যোতি। সেই প্রসঙ্গ টেনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সিনিয়র ইনস্ট্রাক্টর আইরিন পারভীন লোপা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তাকে (জ্যোতিকা জ্যোতি) অফিসে দেখে আমরা হতবাক। যিনি স্বৈরাচার সরকারের হয়ে কথা বলেছেন, যারা সরাসরি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করতে উৎসাহিত করেছেন, যারা সাধারণ মানুষের রক্ত ঝরার জন্য দায়ী, তাদের আমরা সহকর্মী হিসেবে চাই না।’

তিনি জানান, আজ দুপুর সাড়ে ১২টার পর জ্যোতি অফিসে আসেন। বিভিন্ন বিভাগের সহকর্মীদের তার কক্ষের কাছে জড়ো হতে দেখে তিনি নিজের কক্ষের দরজা বন্ধ করে দেন। বেলা দেড়টা নাগাদ তিনি শিল্পকলা থেকে বেরিয়ে যান। লোপা বলেন, ‘আমরা তাকে অফিস থেকে চলে যেতে বলেছি। কারণ তিনি ‘আলো আসবেই’ নামের একটি গ্রুপে যুক্ত হয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে কথা বলেছেন। এমন লোক আমরা দেখতে চাই না।’

২০০৪ সালে একটি সুন্দরী প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে কাজ শুরু করেন ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর করা জ্যোতিকা জ্যোতি। অভিনয় শুরু করেন টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে। তার অভিনীত সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘আয়না, ‘নন্দিত নরকে’, ‘জীবনঢুলি’, ‘অনিল বাগচীর একদিন’, ‘মায়া: দ্য লস্ট মাদার’, ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’, কলকাতায় ‘রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত’।

Advertisement

এমআই/আরএমডি/এএসএম