দেশজুড়ে

নজরদারির অভাবে খুঁড়িয়ে চলছে কমিউনিটি ক্লিনিক

মৌলভীবাজারে বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে ১৮৩টি। প্রতিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ছয় হাজার মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার কথা। তবে পর্যাপ্ত নজরদারি ও তদারকির অভাবে খুঁড়িয়ে চলছে এসব ক্লিনিকের কার্যক্রম।

Advertisement

সরেজমিনে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার একাটুনা ইউনিয়নের রায়শ্রী কমিউনিটি ক্লিনিকে দেখা যায়, ক্লিনিকে তালা ঝুলছে। দেখেই মনে হলো অনেকদিন ধরেই বন্ধ ক্লিনিকটি। এসময় ক্লিনিকের সামনে দিয়ে যাওয়া পথচারী সাজ্জাদ বলেন, ‘প্রায় সময়ই বন্ধ থাকে ক্লিনিকটি। মাঝেমধ্যে খোলে। ভালো সেবা পাওয়া যায় না।

জমুনিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায়, কর্মরত দুজন বসে খাতায় লেখালেখি করছেন। রোগীদের তেমন আনাগোনা নেই। ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) জেসমিন বেগম বলেন, ক্লিনিক সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে আমি শুরু থেকেই এখানে কর্মরত।

ক্লিনিকের সামনে থাকা রোগী আব্দুল কুদ্দুস বলেন, বেশিরভাগ দিনই ক্লিনিক খোলা থাকে না। আজ খোলা দেখে এলাম। যেদিন খোলা হয়, এক ঘণ্টার মতো খোলা রেখে আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। একই অভিযোগ করলেন তার সঙ্গে থাকা নুর মিয়া।

Advertisement

খলিলপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি জসিম মিয়া বলেন, ‘বাস্তবিক দিক দিয়ে একই বেতনে ১৪ বছর ধরে সিএইচসিপিরা চাকরি করছেন। এই পদকে রাজস্ব খাতভুক্ত করতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি। আমাদের মতো অনেকের মন ভেঙে পড়েছে। ঠিকমতো বেতনও পাওয়া যায় না। তারপরও আমরা কমিউনিটি ক্লিনিককে আগলে রাখার চেষ্ট চালিয়ে যাচ্ছি।’

খলিলপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি রাখী ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমার ক্লিনিকে কে বা কারা আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে আমরা পরিষ্কার করে ক্লিনিকের কার্যক্রম শুরু করি। তবে মাসখানেক ধরে আমার এখানে এফডব্লিউএ ও এইচএ নেই। নিজেই সবকাজ করি।’

মোজেফরাবাদ কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায়, বারান্দায় অনেক রোগীর ভিড়। সিএইচসিপি চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। সামনের দোকানদার বলেন, প্রায়সময়ই ক্লিনিক বন্ধ থাকে। খুললেও একঘণ্টা পর তালা লাগিয়ে চলে যান।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. জালাল উদ্দিন মুর্শেদ বলেন, শুরুর দিকে ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসাসেবার মান ভালো ছিল। বর্তমানে সিএইচসিপিদের অনীহা, অবহেলা ও নানান সংকটে ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। যদি সুনির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পাই তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

ওমর ফারুক নাঈম/এসআর/এমএস