শিক্ষা

আন্দোলনের নামে শিক্ষাভবনে শিক্ষকদের মারামারি, ব্যবস্থা নেবে মাউশি

জেলা শিক্ষা অফিসার পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে বৈষম্য নিরসনের দাবিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও সরকারি স্কুলের সহকারী শিক্ষকরা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি করেছেন। এ কর্মসূচি থেকে একপর্যায়ে দুই পক্ষ মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয়পক্ষের কয়েকজন শিক্ষক আহত হয়েছেন। এসময় মোবাইল চুরি ও শিক্ষিকাদের লাঞ্ছিত করার ঘটনাও ঘটেছে বলে খবর পাওয়া যায়।

Advertisement

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষাভবনে এ ঘটনা ঘটে। পরে কিছুক্ষণ দুই পক্ষ দুই পাশে অবস্থান নিয়ে মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে শিক্ষাভবন থেকে চলে যান।

শিক্ষাভবনে এসে এমন মারামারিতে জড়ানোর ঘটনা তদন্ত করে জড়িতদের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করীম।

এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

Advertisement

প্রত্যক্ষদর্শী ও দুই পক্ষের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদে শতভাগ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের পদায়নের দাবিতে সকাল ৯টা থেকে শিক্ষা ভবনে অবস্থান নেন সারাদেশের মাধ্যমিক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা। তারা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি করছিলেন।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেখানে আসেন ৩৫তম থেকে ৪১তম বিসিএসে নন-ক্যাডারে সরকারি বিদ্যালয়ে নিয়োগ পাওয়া ২০/২৫ জন সহকারী শিক্ষক। তারা মিছিল নিয়ে শিক্ষাভবনে প্রদক্ষিণ করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের কর্মসূচির মধ্যেও ঢুকে পড়েন তারা।

দুই দফা তাদের কর্মসূচির মধ্যে ঢুকে পড়ার পর তৃতীয় দফায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসাররা তাদের বাধা দেন। এসময় দুই পক্ষের শিক্ষকদের মধ্যে ব্যানার টানাটানি ও হাতাহাতি শুরু হয়। তারা একে-অন্যকে কিল-ঘুসি মারতে থাকেন। হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন কয়েকজন শিক্ষিকাও। মারামারির মধ্যে একজন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের আইফোন চুরি হয়ে যায় বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়।

সরকারি স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের পক্ষে আন্দোলনে আসা ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা বিসিএস দিয়ে নন-ক্যাডারে শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছি। তারা (মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার) প্রজেক্টে নিয়োগ পেয়েছিলেন। পরে রাজস্ব খাতে এসেছেন। তারা ২০ শতাংশের মতো জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পান। এখন দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সুযোগসন্ধানীরা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পদে শতভাগ পদায়ন চাচ্ছেন। এটা মেনে নেওয়া হবে না।’

Advertisement

মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. লিয়াকত আলী জাগো নিউজকে বলেন, আমরা ৩১ বছর ধরে বৈষম্যের শিকার। এই বৈষম্য নিরসনের দাবি নিয়ে আজ আমরা শিক্ষাভবনে এসেছি। সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ কয়েকজন শিক্ষক নামধারী আমাদের কর্মসূচির মধ্যে ঢুকে পড়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।

তিনি আরও বলেন, বিশৃঙ্খলা এড়াতে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসাররা তাদের বাধা দিলে তারা আমাদের ওপর হামলা চালান। তাদের যে মারমুখী আচরণ, তা শিক্ষকসুলভ নয়।

হামলাকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তি আওতায় আনার দাবিও জানান মো. লিয়াকত আলী।

জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করীম জাগো নিউজকে বলেন, আমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মিটিংয়ে আছি। খবরটি শুনেছি। এ ব্যাপারে মাউশির পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এএএইচ/এমআইএইচএস/এমএস