গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে খোঁজ ছিল না আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) সাবেক প্রধান মো. মনিরুল ইসলামের।
Advertisement
এরপর ১৩ আগস্ট পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) সাবেক প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলামকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।
আজ মঙ্গলবার (সেপ্টেম্বর) হঠাৎ করে নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন মনিরুল ইসলাম।
তিনি স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘প্রিয় ফেসবুক বন্ধুরা, আপনারা যারা আমার বন্ধু তালিকায় থাকা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করেন তারা নিঃশব্দে বিদায় নিতে পারেন। সবার জন্য নিরন্তর শুভকামনা।’
Advertisement
এদিকে, মনিরুল ইসলামের কক্ষ থেকে ২৫ কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে স্পেশাল সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রোটেকশন ব্যাটালিয়নের (এসপিবিএন) ডিআইজি গোলাম কিবরিয়াকে কমিটির প্রধান করা হয়। কমিটিকে অবিলম্বে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে ব্যয় করার জন্য গত ৩ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের কাছ থেকে ২৫ কোটি টাকা এনে নিজের কক্ষে রেখেছিলেন এসবিপ্রধান মনিরুল ইসলাম। কিন্তু সেই টাকা বিতরণ করার আগেই ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। ওই দিন থেকে আর অফিসে যাননি মনিরুল। কিন্তু তার কক্ষে ২৫ কোটি টাকা থাকার তথ্যটি এসবির কয়েকজন কর্মকর্তা জানতেন।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হওয়ার পর পুলিশ সদর দপ্তর তদন্ত কমিটি গঠন করে।
Advertisement
কমিটির প্রধান গোলাম কিবরিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, কমিটির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কমিটির কাজ হলো এসবির সাবেক প্রধানের কক্ষে সেদিন প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছিল, তা নির্ণয় করা। তদন্ত শেষে কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবে।
এসবির একটি সূত্র জানায়, গোয়েন্দা সংস্থার জন্য ‘সোর্স মানি’ হিসেবে নেওয়া টাকার হিসাব দিতে হয় না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন-পীড়নের কাজে ব্যয় করার জন্য শেষ সময়ে তৎকালীন সরকারের কাছ থেকে ‘সোর্স মানি’ হিসেবে ২৫ কোটি টাকা পান মনিরুল। পুরো টাকাই তার অফিস কক্ষে রাখা ছিল। ৫ আগস্ট থেকে মনিরুল অফিসে যাননি। এ বিষয়ে এসবির সংশ্লিষ্ট দু-একজন জানতেন।
তারা সরকার পতনের পরপর পুরো টাকাটা সরিয়ে নেন। বিষয়টি সরকার পতনের পর থেকে এ নিয়ে এসবি অফিসে কানাঘুষা চলছিল। কিন্তু জড়িত ব্যক্তিদের একজন সরকার পতনের পরপর ক্ষমতাবান হয়ে ওঠায় এ নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে রাজি হননি কেউ।
জানা গেছে, টাকা সরিয়ে নেওয়ার সময় তারা গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট আছে উল্লেখ করে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরপরই এসবিপ্রধানের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। ৬ আগস্ট কৌশলে এসবি কার্যালয়ের সব সিসি ক্যামেরা বন্ধ করা হয়।
বিসিএস ১৫ ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে। তিনি শেখ হাসিনা সরকারের আমলে পুলিশে সবচেয়ে প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের একজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
টিটি/এসএনআর/জেআইএম