ক্যাম্পাস

বন্যাদুর্গত খামারিদের পাশে বাকৃবি শিক্ষার্থীরা

সম্প্রতি আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কুমিল্লা জেলার খামারিদের পুনর্বাসনে বেশ কয়েকটি পরিবারকে মোরগ-মুরগি সরবরাহ এবং গবাদিপশুর চিকিৎসাসেবা প্রদানে কাজ করছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা।

Advertisement

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রেজিস্টার্ড ভেটেরিনারিয়ান ও বাকৃবির শিক্ষার্থী ডা. মো. উমর ফারুক। তিনি জানান, পশুচিকিৎসকের ৯ সদস্যের একটি টিম আজ কার্যক্রম পরিচালনা করছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে।

ডা. মো. উমর ফারুক বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে প্রায় ৭০টি পরিবারকে ৪টি করে মুরগি এবং ১টি করে মোরগ সরবরাহ করেছি। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো যেন এখান থেকে পরবর্তীতে বড় করে মুরগির খামার গড়ে তুলতে পারে। পাশাপাশি ৯ সদস্যের একটি পশুচিকিৎসক টিম গবাদিপশুর চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তার মধ্যে ৬ জন রেজিস্টার্ড পশু ডাক্তার এবং ৩ জন বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের স্নাতকের শিক্ষার্থী।

ফান্ডিং সম্পর্কে জানতে চাইলে ডা. মো. উমর ফারুক বলেন, মূলত বাকৃবির শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অনুদানের অর্থ দিয়ে আমরা কার্যক্রম পরিচালনা করছি। এছাড়াও বাকৃবির শিক্ষকদের সন্তানরা কিছু অর্থ অনুদান হিসেবে প্রদান করেছেন। পর্যাপ্ত ফান্ডিং পেলে ভবিষ্যতে আমরা এ কার্যক্রম বর্ধিত করবো।

Advertisement

তিনি বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে আমাদের বার্তা হচ্ছে, ভবিষ্যতে মানুষের পাশাপাশি প্রাণীদের জন্যও আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থা করতে হবে।

বাকৃবির শিক্ষার্থী মাশারাত মালিহা বলেন, এরইমধ্যে বাকৃবির ভেটেরিনারি ও পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন টিম ফেনী জেলার ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলা, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা এবং চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ৬ টন গো খাদ্য ও প্রায় ৩৫ কার্টুন ওষুধ সরবরাহ করেছে। এছাড়া ফ্রি ভেটেরিনারি ক্যাম্পেইন, অসুস্থ প্রাণিদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান ছাড়াও পরবর্তীতে যেকোনো সমস্যার জন্য টেলিমেডিসিন সেবা প্রদান করছে। আমাদের একটাই আহ্বান, সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে সৃষ্টিকূলের প্রতি সেবার এ মহতী উদ্যোগে সকলকে এগিয়ে আসা উচিত।

বাকৃবির আরেক শিক্ষার্থী সুজাউদ্দৌলা সৈকত বলেন, কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামে আমরা গবাদিপশুর জন্য চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করেছি। গবাদিপশুর জন্য আমরা অ্যানথ্রাক্স ও ব্ল্যাক কোয়ার্টার রোগের ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করেছি এবং পাশাপাশি ডায়রিয়া ও পরজীবীঘটিত রোগের চিকিৎসাও প্রদান করে যাচ্ছি।

এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চন্দন কুমার পোদ্দার বলেন, বন্যা কবলিতদের পুনর্বাসনে শিক্ষার্থীরা মহৎ একটি উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা মোরগ এবং মুরগি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে হস্তান্তর করেছি। আশা করি, সব মানুষ এই মহৎ কাজে যুক্ত হবেন এবং সামর্থ্য অনুযায়ী বাছুর, মুরগির বাচ্চা, নগদ অর্থ দিয়ে বন্যাকবলিত খামারিদের পুনর্বাসনে সহায়তা করবেন।

Advertisement

আসিফ ইকবাল/এফএ/জিকেএস