রাজনীতি

রাসুলের আদর্শ অনুসরণে সমাজ পরিবর্তনে আপসহীন ভূমিকা রাখতে হবে

বিশ্বনবী (সা.) এর আদর্শ অনুসরণ করে সমাজ পরিবর্তনে আপসহীন ভূমিকা রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।

Advertisement

তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত হিসেবে দুনিয়াতে প্রেরিত হয়েছিলেন। পবিত্র কালামে হাকীমে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন, ‘আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বজগতের জন্য রহমতরূপে প্রেরণ করেছি।’ তাই দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য একমাত্র আল্লাহর দাসত্ব ও রাসুল (সা.) এর প্রদর্শিত আদর্শকে সর্বান্তকরণে গ্রহণ করতে হবে।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ জাতীয় আকাইভস অডিটোরিয়ামে সিরাতুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর উত্তরের শেরেবাংলা নগর থানা এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

রেজাউল করিম বলেন, গোটা বিশ্বে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উৎকর্ষ এসেছে। মানুষের জীবনাচারণ, বোধ-বিশ্বাস, রুচিবোধ, কৃষ্টি-সংস্কৃতিতে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। জাগতিক ও বৈষয়িক শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছে ব্যাপকভাবে। কিন্তু অতীব পরিতাপের বিষয়, মানুষের বহিরাভরণ জৌলুসপূর্ণ ও দৃষ্টিনন্দন হলেও বৈশ্বিক পর্যায়ে শান্তির প্রত্যাশা বরাবরই অধরাই থেকে গেছে। বিশ্বের সব ক্ষেত্রেই অবক্ষয় ও অশান্তির জয়জয়কার চলছে।

Advertisement

তিনি বলেন, মূলত মানব রচিত মতবাদের কারণে গোটা বিশ্বই এখন অশান্ত হয়ে উঠেছে। রাসুল (সা.) ও খোলাফায়ে রাশেদা অহীর বিধান অনুসরণের মাধ্যমে প্রায় অর্ধেক পৃথিবীতে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিয়েছিলেন। পরে মুসলিম শাসকদের মধ্যে যারা আল্লাহর নির্দেশিত পথ ও রাসুল (সা.) এর আদর্শ অনুসরণে শাসনকার্য পরিচালনার চেষ্টা করেছিলেন তারাও সমাজ, রাষ্ট্র ও বৈশ্বিক পর্যায়ে শান্তি, প্রগতি, উন্নয়ন, অগ্রগতি সর্বোপরি ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় সফল ও সার্থক হয়েছিলেন। তাই বর্তমান বিশ্বকে শান্তির নীড় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হলে অহীর বিধান অনুসরণের কোনো বিকল্প নেই।

এই জামায়াত নেতা বলেন, ইসলাম আল্লাহর পক্ষ থেকে অদ্বিতীয় ও পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। কালামে পাকে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম’(সুরা আল ইমরাম-১৯)। অনত্র বলা হয়েছে, ‘যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দ্বীন তালাশ করে, কখনোই তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে’ (সুরা আল ইমরান-৮৫)।

তিনি বলেন, মূলত আল্লাহ তাআলা আমাদের সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করার মিশন দিয়েই দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। কালামে হাকীমের ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘তোমরাই সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যাণের জন্য তোমাদের উদ্ভব হয়েছে। সুতরাং তোমরা সৎকাজের আদেশ দেবে এবং অন্যায় কাজে বাধা দেবে আর আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে (সুরা আল ইমরান-১১০)। তাই বিশ্বমানবতার ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তির জন্য আমাদের দাওয়াতি কার্যক্রমের সম্প্রসারণ ঘটাতে হবে। তিনি রাসুল (সা.) এর জীবনাদর্শ অনুসরণে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

ঢাকা মহানগর উত্তরের মজলিসে শুরা সদস্য ও শেরেবাংলা নগর থানা আমির আব্দুল আউয়াল আজমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন মাওলানা ফখরুদ্দীন আহমেদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও মোহাম্মদপুর জোন পরিচালক মোহাম্মদ জিয়াউল হাসান।

Advertisement

এ সময় শেরেবাংলা নগর থানার নায়েবে আমির শাহ আজিজুর রহমান তরুণ, বায়তুলমাল সেক্রেটারি হুমায়ন কবির, শেরেবাংলা নগর থানার কর্মপরিষদ সদস্য হাফেজ শাহজাহান, হাফেজ সাইফুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার ইফতেখার সুজন, মনজুরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট তাওহীদুর রহমান, ওয়ার্ড সভাপতি জামাল উদ্দিন পাঠান, ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম, আব্দুর কাইয়ুম সোহাগ ও শাহাদ নূরুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এএএম/ইএ/এএসএম