জাতীয়

কম খরচে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বেশি দামে বিক্রি, খতিয়ে দেখবে কমিটি

কম খরচে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বেশি দামে বিক্রি হয়েছে কি না সেসব বিষয় খতিয়ে দেখবে এ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি। এক্ষেত্রে প্রায় চুক্তিবদ্ধ ৯০টির বেশি কোম্পানির বিষয়ে মন্ত্রণালয় ও পিডিবির কাছে থাকা তথ্য সাতদিনের মধ্যে জাতীয় কমিটির কাছে জমা দিতে হবে।

Advertisement

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) বোর্ড রুমে কমিটির প্রথম বৈঠক শেষে আহ্বায়ক সাবেক বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ (সংশোধিত ২০২১) এর অধীনে সম্পাদিত চুক্তিগুলো পর্যালোচনার লক্ষ্যে সম্প্রতি এই জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়।

আরও পড়ুন বিদ্যুতে ‘ইনডেমনিটি’র আওতায় হওয়া চুক্তির তথ্য চেয়েছে কমিটি বিশেষ বিধান আইনে হওয়া চুক্তি পর্যালোচনায় জাতীয় কমিটি

মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আজ আমাদের কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এ কমিটির কার্যপরিধি হচ্ছে, যে কোনো সূত্র থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও প্রয়োজনীয় যে কোনো নথি নিরীক্ষা করতে পারবে। সংশ্লিষ্ট যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে শুনানিতে আহ্বান করতে পারবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ (সংশোধিত ২০২১)-এর আওতায় এরই মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিগুলোতে সরকারের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়েছে কি না, তা নিরীক্ষা করবে। নিরীক্ষার ভিত্তিতে পরবর্তী কার্যক্রম বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়ন করবে।

Advertisement

তিনি বলেন, এ মুহূর্তে আমরা চুক্তিবদ্ধ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তথ্য চেয়েছি। মন্ত্রণালয় এবং পিডিবিই আমাদের এসব তথ্য দিতে পারবে। কারণ, তাদের কাছে এই ডাটা রয়েছে। এসব তথ্য পাওয়ার পর পর্যালোচনা করে সরকারের কাছে আমরা একটি রিপোর্ট দেবো। সেখানেই সুপারিশ উল্লেখ করা থাকবে। আমাদের কাজই কথা বলবে।

চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান আদানি (ভারতের আদানি গ্রুপ) বিদ্যুতের দাম উৎপাদন খরচের চেয়ে ৩২ গুণ বেশি চেয়েছে। এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক বলেন, বিষয়টি আমরা এখনো পরীক্ষা করিনি। তবে এগুলো দেখা হবে। কমিটি করা হয়েছে এগুলো পরীক্ষা করার জন্য। আমরা এসব বিষয়ে পরীক্ষা করে তারপর সরকারকে সুপারিশ করবো।

‘আর ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। আমরা একটি স্বাধীন কমিটি। এ কমিটি সরকার এবং প্রতিষ্ঠানের মধ্যকার চুক্তি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয়েছে কি না সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবে। আমরা শুধু রিভিউ করবো।’

আরও পড়ুন জ্বালানি খাতের সংকট সহসা কাটবে না, ভুগবে শিল্পকারখানাগুলো

তিনি আরও বলেন, বিদ্যুতের উৎপাদনের ক্ষেত্রে কম খরচ হলেও দাম বেশি দেখানো হয়েছে কি না সেসব বিষয়ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবো। তথ্য চাওয়া হয়েছে। সেগুলো আসুক। তারপর রিভিউ করতে হবে। এর আগেই কথা বলার সুযোগ নেই।

Advertisement

এসময় কমিটির সদস্য বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক আবদুল হাসিব চৌধুরী, কেপিএমজি বাংলাদেশের সাবেক সিওও (চিফ অপারেটিং অফিসার) আলী আশফাক, ফেলো চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (এফসিএ), বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন এবং ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের ফ্যাকাল্টি অব ল’ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সের অর্থনীতির অধ্যাপক মোশতাক হোসেন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন৷

গত ৫ সেপ্টেম্বর বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ (সংশোধিত ২০২১)-এর অধীন সম্পাদিত চুক্তিগুলো পর্যালোচনার লক্ষ্যে পাঁচ সদস্যের এ জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়।

এনএস/এমকেআর/এএসএম