জাতীয়

গুমের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিশনের দায়িত্বে পরিবর্তন

আওয়ামী লীগের শাসনামলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে গঠিত তদন্ত কমিশনের দায়িত্বে পরিবর্তন আনা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময়ও বাড়ানো হয়েছে।

Advertisement

এসব পরিবর্তন এনে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে নতুন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এর আগে গত ২৭ আগস্ট তদন্ত কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, শৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থা এবং এমন যে কোনো বাহিনী বা সংস্থার কোনো সদস্য বা সরকারের মদদে, সহায়তায় বা সম্মতিতে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তি-সমষ্টির ‘আয়না ঘর’ বা যে কোনো জ্ঞাত বা অজ্ঞাত স্থানে বলপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, বলপূর্বক গুমের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিতকরণ ও তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ এবং বলপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় আইন সংস্কারের সুপারিশসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কার্যাদি সম্পাদনের জন্য এ তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে নতুন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়।

কমিশন কমিশন অব ইনকয়ারি অ্যাক্ট, ১৯৫৬ অনুসারে তদন্তকার্য সম্পন্ন করে তিন মাসের মধ্যে সরকারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে। আগের প্রজ্ঞাপনে সময় দেওয়া হয়েছিল ৪৫ কর্মদিবস।

Advertisement

কমিশনের সদস্য সংখ্যা আগের মতো পাঁচজনইএ কমিশনের সভাপতি হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। কমিশনে সদস্য হিসেবে রয়েছেন- হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকার কর্মী সাজ্জাদ হোসেন।

আরও পড়ুনআওয়ামী লীগ আমলে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে কমিশন গঠনগুমের ঘটনা তদন্ত ও বিচারে কমিশন গঠন করবে সরকারগুম হওয়া ৬৪ জনের তালিকা তদন্ত কমিশনে

তদন্ত কমিশনের সভাপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারক এবং কমিশনের সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারকের মর্যাদা এবং অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

তদন্ত কমিশন ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, শৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থা এবং অনুরূপ যে কোনো বাহিনী বা সংস্থার কোনো সদস্য বা সরকারের মদদে, সহায়তায় বা সম্মতিতে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তি-সমষ্টির আয়না ঘর বা যে কোনো জ্ঞাত বা অজ্ঞাত স্থানে বলপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, তাদের শনাক্ত করা এবং কোনো পরিস্থিতিতে গুম হয়েছিল তা নির্ধারণ করা এবং সেই উদ্দেশ্যে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যসহ যে কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা।

আগে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত। এছাড়া কমিশন বলপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনাগুলোর বিবরণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল এবং এ বিষয়ে সুপারিশ করবে।

Advertisement

কমিশন বলপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান পাওয়া গেলে তাদের আত্মীয়-স্বজনকে জানাবে জানিয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গুম হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে অন্য কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের পরিচালিত তদন্তের তথ্য সংগ্রহ করা করবে কমিশন। বলপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করা এবং তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশও দেবে এ কমিশন।

এছাড়া বলপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় আইন সংস্কারের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ দেবে তদন্ত কমিশন।

তদন্ত কমিশন বাংলাদেশের যে কোনো স্থান পরিদর্শন এবং যে কোনো ব্যক্তিকে কমিশনে তলব ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে জানিয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ তদন্ত কমিশনকে সাচিবিক সহায়তাসহ সব ধরনের সহায়তা দেবে। কমিশনের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করবে এবং কমিশনকে সহায়তায় যে কোনো কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিতে পারবে।

আরএমএম/এমআইএইচএস/জেআইএম