দেশজুড়ে

চাঁবিপ্রবির দুই শিক্ষককে বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাখ্যান

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বাধা দিয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে ‘অজ্ঞাতস্থানে’ আছেন চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. নাছিম আখতার। সেখান থেকেই দুই শিক্ষককে বরখাস্ত করে আদেশ দিয়েছেন তিনি। সেই আদেশ প্রত্যাখ্যান করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক সমিতি ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

Advertisement

৯ সেপ্টেম্বরের ওই আদেশ প্রত্যাখ্যান করে ১১ সেপ্টেম্বর পৃথক দুটি বিবৃতি দেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। ১৪ সেপ্টেম্বর চাঁবিপ্রবির শিক্ষক সমিতি ও শিক্ষার্থীরা এসব তথ্য সংবাদমাধ্যমকে জানান।

শিক্ষক সমিতির বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের প্রভাষক ও সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল রানা, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক মো. জাহিদুল ইসলাম এবং ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রভাষক খাদিজা খাতুন টুম্পা। অন্যদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে দেওয়া বিবৃতিটি সিএসটিউই ইনসাইডার ফেসবুক পেজে আপলোড করা হয়।

শিক্ষক সমিতির বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৯ সেপ্টেম্বর উপাচার্য তার অফিসিয়াল ইমেইল ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত দুটি পৃথক অফিস আদেশের মাধ্যমে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের প্রভাষক নাজিম উদ্দিন এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক প্রিন্স মাহমুদকে অব্যাহতি দেন।

Advertisement

বিবৃতিতে বলা হয়, ওই অফিস আদেশে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বেতনভোগী শিক্ষক বা কর্মচারীকে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পর্কে কোনো তদন্ত কমিটি দিয়ে তদন্ত অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত এবং তাকে ব্যক্তিগতভাবে বা কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান না করে চাকরি থেকে অপসারণ বা পদচ্যুত করা যাবে না।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভিসি আইন লঙ্ঘন করেছেন। শিক্ষার্থীদের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারবিরোধী আন্দোলনে অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষকদ্বয়সহ সব শিক্ষকের সমর্থন থাকায় উপাচার্য ব্যক্তিগত ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে তাদের কোনো ধরনের আইনের তোয়াক্কা না করে অব্যাহতি দেন। চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি শিক্ষকদের পক্ষ থেকে উপাচার্যের এহেন সিদ্ধান্ত ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে এবং উনার বিধিবহির্ভূত সব কর্মকাণ্ডের জন্য তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ৯ সেপ্টেম্বর যে অফিস আদেশ জারি করেছেন তা চাঁবিপ্রবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখান করেছে। শিক্ষকদের অব্যাহতি দিয়ে জারি করা অবৈধ অফিস আদেশ বাতিল না করা পর্যন্ত চাঁবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা কোনো প্রকার একাডেমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবে না।

প্রসঙ্গত, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে উপাচার্য সরাসরি বাধা দেন এবং ব্যানার ছিড়ে ফেলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে নিজের লেখা একটি বই উৎসর্গ করেছেন তিনি। সরকার পতনের পর থেকেই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ক্যাম্পাস ছেড়ে ‘অজ্ঞাতস্থানে’ অবস্থান করছেন উপাচার্য।

Advertisement

শরীফুল ইসলাম/এমএইচআর/এমএস