নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বড়াইগ্রামের কচুগাড়ী বিলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা।
Advertisement
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দেখা যায় এই আয়োজনকে ঘিরে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।
বাহারী নৌকায় বাজছে ঢোল-বাদ্যযন্ত্র। তাল মিলিয়ে চলছে মাঝি-মাল্লাদের বৈঠা। চলছে সমবেত জারি আর সারি গান। নৌকায় করে ও বিলপাড়ে দাঁড়িয়ে নানা বয়সের হাজার হাজার উৎসুক দর্শনার্থী বিলুপ্তপ্রায় এ নৌকাবাইচ উপভোগ করতে এসেছেন।
প্রতিযোগিতায় মোট ৮টি নৌকা অংশগ্রহণ করে। প্রতিটি নৌকায় ৩০-৩৫ জন করে মাল্লা ছিলেন। জানা যায়, প্রতিযোগিতায় ‘ক’ গ্রুপে বড়াইগ্রামের কচুগাড়ি গ্রামের নৌকা ফাতেমা পরিবহণ প্রথম, সোনার তরী দ্বিতীয় এবং আরিফ এক্সপ্রেস তৃতীয় হয়েছে। এছাড়া ‘খ’ গ্রুপে মিথিলা এক্সপ্রেস প্রথম, মিলন এক্সপ্রেস দ্বিতীয় এবং নয়ন এক্সপ্রেস তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে।
Advertisement
প্রতিযোগিতা শেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি শিক্ষাবিদ মজনু মোহাম্মদ ইসহাক বিজয়ীদের হাতে প্রথম পুরষ্কার একটি এলইডি টিভি, দ্বিতীয় পুরষ্কার মোবাইল ফোন ও তৃতীয় পুরষ্কার একটি করে প্রেসার কুকার তুলে দেন।
দর্শনার্থী কাছিকাটা গ্রামের আয়ুব আলী বলেন, নৌকাবাইচ গ্রামবাংলার হারাতে বসা ঐতিহ্য। একসময় গ্রামের মানুষের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম ছিল নৌকাবাইচ। কচুগাড়ী বিলে নৌকাবাইচের খবর শুনে এসেছি। প্রতিযোগিতা দেখে খুব আনন্দ পেয়েছি। অসাধারণ একটি সময় কেটেছে।
কচুগাড়ী গ্রামের কহিনুর বেগম জানান, ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে বাড়ি বাড়ি যেমন মেহমান আসে ঠিক তেমনি নৌকাবাইচকে কেন্দ্র করে বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন এসেছে। সবাই মিলে নৌকাবাইচ দেখে মজা পেয়েছি।
আয়োজক কমিটির পক্ষে মাহমুদুল হক খোকন বলেন, এই ঐতিহ্য মানুষকে সুস্থ বিনোদন দেয়। আয়োজন ঘিরে এলাকায় বইছে উৎসবের আমেজ। নতুন প্রজন্ম হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য দেখতে পেয়ে আনন্দিত। ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আগামীতেও এমন আয়োজন অব্যাহত থাকবে।
Advertisement
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে চলনবিল প্রবাহ সম্পাদক মাহমুদুল হক খোকন, কচুগাড়ি ফকির বাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমএম জামান হোসেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক সাব্বির হোসেন রতন, বড়াইগ্রাম উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি অহিদুল হক, গুরুদাসপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি সাজেদুর রহমান, ইউপি সদস্য সুজন আলম, সমাজসেবক হাসানুজ্জামান জয়, সাফিউল্লাহ তোতা ও তাইজুল ইসলাম বিদ্যুৎ উপস্থিত ছিলেন। #
রেজাউল করিম রেজা/এসআইটি/এমএস