কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসা নারীকে মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। হেনস্তার শিকার ওই নারী দুজনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি করেন। মামলায় আরও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
Advertisement
এর আগে শুক্রবার দিনগত রাতে নারী হেনস্তার অভিযোগে ফারুকুল ইসলাম (২৮) নামে এক যুবককে ডিবি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মামলার দায়েরের পর ফারুককে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় বলে নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি জাবেদ মাহমুদ।
ফারুকুল ইসলাম চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতী বড়হাতিয়া ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মওলানা আব্দুল মাজেদের ছেলে। তিনি কক্সবাজারের বাহারছড়া বিদ্যুৎ অফিস সংলগ্ন 'কেএসএম ভিলায়' বসবাস করেন।
মামলার অপর আসামি হলেন, মো. নয়ন রুদ্র। তিনিও চট্টগ্রামের সাতকানিয়া এলাকার বাসিন্দা।
Advertisement
বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, হেনস্তার শিকার ৩-৪ জন তৃতীয় লিঙ্গের লোক প্রতিদিনের ন্যায় ১১ সেপ্টেম্বর রাতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত সুগন্ধা সি-বিচ এলাকায় ঘুরতে যান। এসময় ফারুকুল ইসলাম নিজেকে ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে বাদী ও তার বন্ধুরা কেন সৈকতে এসেছে, মানুষকে কেন হয়রানি করে- এসব বলতে বলতে মারতে থাকেন। এক পর্যায়ে একজনে কান ধরে ওঠবস করিয়ে ভিডিও ধারণ করে সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
এ বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি জাবেদ মাহমুদ বলেন, সৈকতে এক নারীকে কান ধরিয়ে ওঠবস করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে চারদিকে সমালোচনা শুরু হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ফারুকুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে হেনস্তার শিকার নারী মামলা করলে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের নামে কিছু যুবক পুলিশের অগোচরে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। এভাবে আইন হাতে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। তারা পুলিশের সহযোগিতা নিতে পারতেন।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কক্সবাজারের সমন্বয়ক জিনিয়া শারমিন রিয়া বলেন, ছাত্র আন্দোলনে কোথাও বলা নেই যে, আপনি আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন। তাদের ওপর যে নির্যাতন হয়েছে এটা কোনো ছাত্রদের কাজ হতে পারে না।
Advertisement
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, কক্সবাজার সৈকতে কয়েকজন নারীকে প্রকাশ্যে শারীরিক হেনস্থা ও নির্যাতনের একটা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর জেলা পুলিশ বিষয়টাকে গুরুত্বসহকারে এবং স্পর্শকাতর হিসেবে নিয়ে অভিযুক্ত যুবককে আটক করা হয়। ভিডিওতে যারা ছিল বাকিদেরও শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
সায়ীদ আলমগীর/আরএইচ/জেআইএম