কুমিল্লায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ সাব্বির হোসেন (১৯) মারা গেছেন। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলার দেবিদ্বার ভিংলাবাড়ি এলাকায় তার মৃত্যু হয়।
Advertisement
সাব্বিরের বাড়ি মুরাদনগর উপজেলার কাজিয়াতল গ্রামে। ছোটবেলা থেকে তিনি নানাবাড়ি ভিংলাবাড়িতে মায়ের সঙ্গে থাকতেন।
দেবিদ্বার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে সাব্বিরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়রা জানান, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেবিদ্বারে বিজয় মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা। এ সময় পুলিশ পাশের ভবনের ছাদ থেকে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। এতে ১৫-১৬ জন গুলিবিদ্ধ হন। এসময় সাব্বিরের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলি লাগে।
Advertisement
পুলিশের দাবি, ওইদিন দেবিদ্বার নিউমার্কেট গোলচত্বর এলাকায় সেদিনের মিছিলে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা গুলিবর্ষণ করে। এতে গুলিবিদ্ধ হন সাব্বির।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিছুদিন চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে অস্ত্রোপচার করে সাব্বিরের মাথার ভেতর থেকে গুলি বের করা হয়। এতে ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকেন সাব্বির। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হলে তিনি দেবিদ্বার ভিংলাবাড়িতে ফিরেন।
শনিবার সকালে হঠাৎ অস্বস্তি লাগছে বলে মাকে জানান সাব্বির। পরে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়েন। স্বজনরা তাকে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সাব্বির হোসেন তিন-ভাইবোনের মধ্যে সবার বড়। তিন বছর আগে তার বাবার মৃত্যু হয়। এরপর পরিবারের হাল ধরেন সাব্বির। অটোরিকশা চালিয়ে সংসারে আর্থিক জোগান দিতেন তিনি।
Advertisement
এ বিষয়ে দেবিদ্বার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহিনুল ইসলাম বলেন, সাব্বিরের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর আমরা তার বাড়ি যাই। মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য অনুরোধ করি। এসময় স্থানীরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফনের অনুরোধ করেন। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সাব্বিরের মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়।
জাহিদ পাটোয়ারী/আরএইচ/জেআইএম