গত সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ারবাজারে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে তার আড়াইগুণ বেশ প্রতিষ্ঠানের দাম কমেছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহজুড়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১০৭টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে ২৭১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে।
Advertisement
এমন পতনের বাজারে বিপরীত চিত্রে ছিল কিছু প্রতিষ্ঠান। দাম কমার বদলে গত সপ্তাহজুড়ে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে। এ দাম বাড়ার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছে ন্যাশনাল টি। বিনিয়োগকারীদের একটি অংশের কাছে কোম্পানিটির শেয়ার পছন্দের শীর্ষে চলে আসে। এতে সপ্তাহজুড়েই কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে।
গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৫২ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ১৬৬ টাকা ৬০ পয়সা। এতে এক সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার দাম সম্মিলিতভাবে বেড়েছে ১০৯ কোটি ৯৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। সপ্তাহের শুরুতে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৩২০ টাকা ৩০ পয়সা, যা সপ্তাহ শেষে দাঁড়িয়েছে ৪৮৬ টাকা ৯০ পয়সায়।
শেয়ার দামে এমন দাম বাড়া কোম্পানিটি লোকসানে নিমজ্জিত হওয়ায় সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরে বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। তার আগে ২০২২ সালে কোম্পানিটি সাড়ে ৭ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। এছাড়া ২০২১ সালে ১০ শতাংশ, ২০২০ সালে ৫ শতাংশ এবং ২০১৯ সালে ২২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।
Advertisement
এদিকে সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটি ২০২৩ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ছয় মাসের ব্যবসায় শেয়ারপ্রতি লোকসান করেছে ১০৪ টাকা ১০ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি ৪৬ টাকা ২ পয়সা লোকসান হয়। অর্থাৎ চলমান হিসাব বছরে কোম্পানিটির লোকসানের পাল্লা-ভারি হয়েছে।
লোকসানে নিমজ্জিত প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের এ দাম বাড়াকে অস্বাভাবিক বলছে ডিএসই কর্তৃপক্ষও। এ জন্য বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে ডিএসই থেকে বার্তাও প্রকাশ করা হয়েছে। ডিএসই জানিয়েছে, কোম্পানিটির শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে নোটিশ করা হয়। জবাবে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে- সম্প্রতি শেয়ারের যে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে, তার পেছনে অপ্রকাশিত কোনো মূল্য সংবেদশীল তথ্য নেই।
১৯৭৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এ কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আর শেয়ার সংখ্যা ৬৬ লাখ। এর মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে আছে ৪৫ দশমিক ২৬ শতাংশ শেয়ার। সরকারের কাছে আছে ৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ শেয়ার আছে।
ন্যাশনাল টি’র পরেই গত সপ্তাহে দাম বাড়ার তালিকায় ছিল খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ। সপ্তাহজুড়ে এ কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৩১ দশমিক ৬০ শতাংশ। ২৮ দশমিক ১১ শতাংশ দাম বাড়ার মাধ্যমে পরের স্থানে রয়েছে নর্দার্ন জুট ম্যানুফ্যাকচারিং।
Advertisement
এছাড়া গত সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা- জুট স্পিনিংয়ের ২৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ, ওরিয়ন ইনফিউশনের ২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ, লিব্রা ইনফিউশনের ২১ দশমিক ২২ শতাংশ, বিকন ফার্মার ১৯ দশমিক ২৩ শতাংশ, মিরাকেল্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ১৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ, বেক্সিমকো সুকুক’র ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ এবং বাংলাদেশে সাবমেরিন কেবলসের ১৫ শতাংশ দাম বেড়েছে।
এমএএস/এমএএইচ/জেআইএম