বিবিধ

মাজারসহ ধর্মীয় স্থাপনার নিরাপত্তা দাবি

মাজারসহ ধর্মীয় স্থাপনার নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এখনই সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের ৪৬ নাগরিক। কথাসাহিত্যিক সালাহ উদ্দিন শুভ্র প্রেরিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।

Advertisement

বিবৃতিতে বলা হয়, হাজারো শিক্ষার্থী-জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে আবারও গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে বাংলাদেশে। সব মত, পথ, বিশ্বাস ও শ্রেণি-পেশার মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থী-জনতা জীবন দিয়েছে অকাতরে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের বুলেটের যন্ত্রণা এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকে। শহীদ পরিবারের বন্ধু-স্বজনদের চোখের জলও শুকায়নি।

বিগত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আমরা দেখেছি, প্রায় সব ধরনের ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠান বা বাসা-বাড়িতে হামলা হয়েছে। এসব হামলা বন্ধে অথবা হামলার পর দোষীদের আইনের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যর্থ ছিল তখন। অনেক ক্ষেত্রে হামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জড়িত ছিল বলে তথ্য রয়েছে। নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগ সরকার সমাজে গভীর বিভাজন সৃষ্টির জন্য এসব করেছিল বলে অনেকের ধারণা। হয়তো সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিষ্ক্রিয় থাকতে হয়েছিল। কিন্তু হাজারো শহীদের রক্তে অর্জিত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের নতুন সময়ে তারা কেন নিশ্চুপ, সেই উত্তর মিলছে না।

আরও পড়ুন সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনের দুর্নীতিগ্রস্ত প্রধানদের পদত্যাগ দাবি

গত কয়েকদিনে দেখা গেছে, সামাজিকমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে সংগঠিত হয়ে মাজারসহ আধ্যাত্মিক স্থাপনায় হামলা হচ্ছে। এর আগে আমরা দেখেছি মন্দিরে হামলা হতে। এসব কোনো ঘটনায় কাউকে বিচারের আওতায় আনতে বা মামলা করার খবরও পাওয়া যায়নি। মাজারে হামলার কোনো ঘটনায়ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি। তাদের এই নিষ্ক্রিয়তা সমাজের গভীরের ক্ষতকে বিস্তৃত করবে। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভেতর বিভাজন আরও বাড়াবে। যা আগের মতো অগণতান্ত্রিক শক্তির হাতে বাংলাদেশকে ছেড়ে দেওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করবে।

Advertisement

তাই আমরা মনে করি, সব সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌহার্দ্য ও বন্ধুত্ব অটুট রাখতে মন্দির-মাজারসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে হামলা বন্ধে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এখনই সক্রিয় হতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়েরও এ ক্ষেত্রে নিশ্চুপ থাকার সুযোগ নেই বলে আমরা মনে করি।

বিবৃতিতে সম্মতি জানিয়েছেন- অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, কবি আব্দুল হাই শিকদার, কবি কাজল শাহনেওয়াজ, শিল্পী মুস্তাফা জামান, শিল্পী অরূপ রাহী, শিক্ষক আর রাজী, লেখক রাখাল রাহা, কবি আহমেদ স্বপন মাহমুদ, শিক্ষক বীথি ঘোষ, কবি ফেরদৌস আরা রুমী, লেখক বাকী বিল্লাহ, প্রকাশক সাঈদ বারী, কথাসাহিত্যিক এহসান মাহমুদ, চলচ্চিত্রকর্মী রাফসান আহমেদ, কবি সৈকত আমীন, প্রযুক্তি পরামর্শক সাদিক মোহাম্মদ আলম, নারী অধিকার কর্মী পূরবী তালুকদার, অ্যাক্টিভিস্ট মারজিয়া প্রভা, মানবাধিকার কর্মী মোশফেক আরা, উন্নয়নকর্মী কামরুজ্জামান রিপন, শিক্ষক সুস্মিতা চক্রবর্তী, অ্যাক্টিভিস্ট মোহাম্মদ রোমেল, শিক্ষক মাসুদ ইমরান মান্নু, কথাসাহিত্যিক মশিউল আলম, অভিনেতা দীপক সুমন, নৃবিজ্ঞানী সায়েমা খাতুন, অধ্যাপক হেলাল মহিউদ্দীন, শিল্পী লতিফুল ইসলাম শিবলী, মানবাধিকার কর্মী রেজাউর রহমান লেনিন, কথাসাহিত্যিক সালাহ উদ্দিন শুভ্র, সাংবাদিক মারুফ মল্লিক, কবি সাখাওয়াত টিপু, লেখক ওমর তারেক চৌধুরী, শিক্ষক মোশরেকা অদিতি হক, কবি কাজী জেসিন, শিক্ষক রায়হান রাইন, শিক্ষক জি এইচ হাবীব, শিক্ষক ড. শরৎ চৌধুরী, শিল্পী দেবাশীষ চক্রবর্তী, কবি পলিয়ার ওয়াহিদ, কথাসাহিত্যিক মোহাম্মদ নাজিমউদ্দিন, শিক্ষক আ-আল মামুন, শিল্পী অমল আকাশ, প্রকাশক মাহবুব রাহমান, কবি তুহিন খান।

এসইউ/এএসএম

Advertisement