কোনো বেচাকেনায় ক্রেতা যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য পরিশোধের শর্তে আগাম মূল্য পরিশোধ করে, তাহলে নিরাপত্তার জন্য পণ্য বুঝে পাওয়ার আগ পর্যন্ত ক্রেতা বিক্রেতার কাছ থেকে কিছু বন্ধক রাখতে পারে। এ রকম বেচাকেনায় বন্ধক রাখা জায়েজ।
Advertisement
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.), আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.), ইবরাহিম নাখঈ (রহ.), শাবি (রহ.) প্রমুখ সাহাবি-তাবেঈ থেকে বর্ণিত আছে, তারা বলেন, আগাম মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে বিক্রেতা থেকে বন্ধক নিলে তাতে কোনো অসুবিধা নেই। (মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক: ১৪০৮৬)
তবে ক্রেতার জন্য ঐ বন্ধকি বস্তু থেকে কোনোভাবে উপকৃত হওয়া বা উপকৃত হওয়ার শর্তে আগাম মূল্য পরিশোধ করা ও বন্ধক রাখা নাজায়েজ হবে যেমন বন্ধকি সম্পদ থেকে উপকৃত হওয়ার শর্তে ঋণ দেওয়া নাজায়েজ। ও বন্ধক দেওয়া ইসলামে সম্পূর্ণরূপে নাজায়েজ।
কারণ এগুলো ঋণের বিনিময়ে সুদ গ্রহণেরই একটি প্রকার যা ইসলামে অত্যন্ত গর্হিত গুনাহের কাজ। ইবনে সীরীন (রহ.) বলেন, এক ব্যক্তি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদের (রা.) কাছে এসে বললেন, এক লোক আমার নিকট একটি ঘোড়া বন্ধক রেখেছে, অতঃপর আমি তাতে আরোহণ করেছি। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বললেন,
Advertisement
مَا أَصَبْتَ مِنْ ظَهْرِهَا فَهُوَ رِبًا.
তুমি ওই ঘোড়ার ওপর যে পরিমাণ আরোহণ করেছ তা সুদ হয়েছে। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক: ১৫০৭১)
আমাদের দেশে জমি, গরু ইত্যাদি বন্ধক রাখার প্রচলিত পদ্ধতিতে সাধারণত বন্ধকি সম্পদ থেকে উপকৃত হওয়ার শর্তও অন্তর্ভুক্ত থাকে। যেমন জমি বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়ার যে পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে তা হলো, ঋণগ্রহীতা জমি বন্ধক রেখে ঋণ নেয় এবং ঋণদাতা ওই বন্ধকি জমি ভোগ করতে থাকে বা তা থেকে যে কোনোভাবে উপকৃত হতে থাকে ঋণ পরিশোধ হওয়ার আগ পর্যন্ত। ঋণগ্রহীতা ঋণ পরিশোধ করতে পারলে নিজের জমি ফিরে পায়। এভাবে বন্ধক রাখা ও বন্ধকি সম্পদ থেকে উপকৃত হওয়া নাজায়েজ।
ওএফএফ/জিকেএস
Advertisement