আমাদের দেশে অন্যকে ‘আল্লাহর কসম দিয়ে’ অনুরোধ করার প্রচলন আছে। যেমন ‘আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি আপনি এই কাজটি করুন’ ‘কসম লাগে এমনটি করবেন না’ ইত্যাদি। এভাবে ‘আল্লাহর কসম দিয়ে’ অনুরোধ করলে তা কসম গণ্য হবে না।
Advertisement
এভাবে অনুরোধ পরও যদি ওই কাজটি না করা হয়, তাহলে যিনি বলেছেন এবং যাকে বলা হয়েছে কারো ওপরই কসমের কাফফারা ওয়াজিব হবে না। তবে এভাবে কাউকে আল্লাহর কসম দিয়ে অনুরোধ করা অনুচিত। এমনটি বলা থেকে বিরত থাকতে হবে।
কেউ যদি আল্লাহর নামে কসম করে নিজে কোনো কাজ করার প্রতিজ্ঞা করে যেমন ‘আল্লাহর কসম করে বলছি আমি ওই কাজটি করবো’ তাহলে তা কসম গণ্য হয়। পরে তা রক্ষা করতে ব্যর্থ হলে সেজন্য কাফফারা দিতে হয়। কসম ভঙ্গের কাফফারা হলো দশজন দরিদ্র ব্যক্তিকে দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে খাবার খাওয়ানো অথবা দশজন দরিদ্র ব্যক্তিকে এক জোড়া করে পোশাক দান করা, সামর্থ্য না থাকলে তিন দিন রোজা রাখা। কসমের কাফফারার বিধান বর্ণনা করে কোরআনে আল্লাহ বলেন,
لَا یُؤَاخِذُکُمُ اللّٰهُ بِاللَّغۡوِ فِیۡۤ اَیۡمَانِکُمۡ وَ لٰکِنۡ یُّؤَاخِذُکُمۡ بِمَا عَقَّدۡتُّمُ الۡاَیۡمَانَ فَکَفَّارَتُهٗۤ اِطۡعَامُ عَشَرَۃِ مَسٰکِیۡنَ مِنۡ اَوۡسَطِ مَا تُطۡعِمُوۡنَ اَهۡلِیۡکُمۡ اَوۡ کِسۡوَتُهُمۡ اَوۡ تَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ ؕ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلٰثَۃِ اَیَّامٍ
Advertisement
আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না অর্থহীন কসমের ব্যাপারে, কিন্তু যে কসম তোমরা দৃঢ়ভাবে কর সে কসমের জন্য তোমাদেরকে পাকড়াও করেন। সুতরাং এর কাফফারা হল দশ জন মিসকীনকে খাবার দান করা, মধ্যম ধরনের খাবার, যা তোমরা নিজেদের পরিবারকে খাইয়ে থাক, অথবা তাদের বস্ত্র দান করা, কিংবা একজন দাস-দাসী মুক্ত করা। যে সামর্থ্য রাখে না, তার জন্য তিন দিন রোজা রাখা। (সুরা মায়েদা: ৮৯)
মিসকিনদের খাবার খাওয়ানোর মাধ্যমে কসমের কাফফারা আদায় করতে চাইলে দশজন মিসকিনকে দুই বেলা খাবার খাওয়াতে হবে যেভাবে আয়াতে বলা হয়েছে। পোশাক দান করার মাধ্যমে কাফফারা আদায় করতে চাইলে দশজন মিসকিনকে এক জোড়া করে পোশাক দিতে হবে।
শপথ ভঙ্গের কাফফারা টাকা দিয়েও আদায় করা যাবে। খাবার খাওয়ানো বা পোশাক বিতরণের বদলে এর যে কোনোটির মূল্য অর্থাৎ দশজন মিসকিনকে দুই বেলা মধ্যম মানের খাবার খাওয়ালে যে ব্যয় হতো তা হিসাব করে বা দশ জোড়া পোশাকের মূল্য সদকা করলে কফফারা আদায় হয়ে যাবে।
সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ টাকাকে একজন মানুষের দুই বেলা খাবারের খরচ ধরা হয়। এ হিসেবে সদকায়ে ফিতরের পরিমাণকে দশ দিয়ে গুণ দিলে যত টাকা হয়, তাই হবে কসমের কাফফারা। যেমন গত রমজানে সদকায়ে ফিতর ছিল সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা যা ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম গম বা আটার বাজারমূল্য। এর দশ গুণ অর্থাৎ ১১৫০ টাকা দান করলে কসমের কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। আটার বাজারমূল্য বাড়লে বা কমলে এই অংকও বাড়বে বা কমবে।
Advertisement
ওএফএফ/এমএস