ভয়াবহ বন্যাকবলিত ফেনীতে সরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ থাকা, বেসরকারি হাসপাতালের সুযোগ গ্রহণ ও অনিয়ন্ত্রিত খরচ, কিডনি জটিলতার রোগীদের ব্যাপক ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসককে (ডিসি) জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Advertisement
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে প্রকাশিত ‘ডায়ালাইসিস বন্ধে ঝুঁকিতে ২১০ রোগী’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি নজরে আসে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের।
সরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ থাকায় অর্থাভাবে চিকিৎসা না পেয়ে রোগীদের মৃত্যুর শঙ্কা রয়েছে যা অত্যন্ত অমানবিক ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে মনে করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। উল্লিখিত বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে।
কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত সুয়োমটোতে উল্লেখ করা হয়েছে, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার ক্ষত ফেনীর প্রায় সর্বত্র। কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ কোনো খাতই স্বাভাবিক হয়নি জেলাটিতে। ২৫০ শয্যার ফেনী জেনারেল হাসপাতালের কার্যক্রমও পুরোপুরি শুরু হয়নি। বিশেষ করে হাসপাতালটির নিচতলা ডুবে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাসপাতালের হেমোডায়ালাইসিস সেবা কার্যক্রম। সেখানে ২১ দিন ধরে বন্ধ আছে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার। ফলে বন্যার আগে সেখানে নিয়মিত সেবা নেওয়া ২১০ জন কিডনি রোগী পড়েছেন চরম ঝুঁকিতে। শহরের মাত্র চারটি বেসরকারি ক্লিনিকে সেবাটি চালু থাকলেও সেখানে খরচ বেশি হওয়ায় সবাই যেতেও পারছেন না। হাসপাতালের সেবা বন্ধ থাকায় বেসরকারি ক্লিনিকগুলো এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মানুষের প্রচুর টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
Advertisement
সুয়োমটোতে সরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সেবা সচল রাখার জন্য অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে বেসরকারি ডায়ালাইসিস সেবা প্রদানকারী হাসপাতালগুলোতে রোগীদের জীবন রক্ষার্থে ফি সাধারণ মানুষের সক্ষমতার মধ্যে নির্ধারণ করে কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণ করতে মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, ডায়ালাইসিস সেবা না পেয়ে যাতে কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে অতি দ্রুততার সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য ফেনীর জেলা প্রশাসককে বলা হয়েছে।
এফএইচ/এসএনআর/এএসএম