আইন-আদালত

ইসির আপিল প্রত্যাহার, গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিতে বাধা নেই

জোনায়েদ সাকির নেতৃত্বাধীন গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিতে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে নির্বাচন কমিশন যে আপিল করেছিল, তা প্রত্যাহারে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়েছে। এর ফলে রাজনৈতিক দল হিসেবে গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিতে আইনি বাধা নেই বলে জানিয়েছেন দলটির আইনজীবী।

Advertisement

রাজনৈতিক দল হিসেবে গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিতে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল আর পরিচালনা করবে না নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে তারা আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এফিডেভিট দাখিল করেছেন। ফলে গণসংহতি আন্দোলকে নিবন্ধন দিতে হাইকোর্টের দেওয়া রায়টিই কার্যকর হলো এবং দলটিকে নিবন্ধন দিতে আর কোনো আইনি বাধা রইলো না।

আবেদনে বলা হয়েছে, আপিল মামলা পরিচালনা করতে তারা আগ্রহী নয়। এ কারণে হাইকোর্টের রায়ের আলোকে এখন গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিতে কোনো আইনি বাধা নেই।

প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকির উপস্থিতিতে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে গণসংহতি আন্দোলনের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আমরা আশা করছি খুব দ্রুতই এখন গণসংগতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে ইসি।

Advertisement

এর আগে ২০২২ সালের ৬ জুন জোনায়েদ সাকির নেতৃত্বাধীন গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিতে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

সেদিন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, গণসংহতি আন্দোলন ২০১৯ সালে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করলে নির্বাচন কমিশন সে আবেদন নাকচ করে দেয়। নির্বাচন কমিশনের ওই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়। রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিতে নির্দেশ দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধ ইসি আপিল করে।

আরও পড়ুন

গণসংহতি আন্দোলনের নিবন্ধন দেয়ার নির্দেশ গণসংহতিকে নিবন্ধন না দেওয়ায় সিইসির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল

২০১৯ সালে গণসংহতি আন্দোলনকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছিল। হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

Advertisement

এ বিষয়ে ২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। ওই রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালে হাইকোর্ট আইন অনুসারে রাজনৈতিক দল হিসেবে গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিতে ইসিকে নির্দেশ দেন। পরবর্তী সময়ে ইসির আবেদনে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন চেম্বার জজ আদালত এবং পরে আপিল শুনানির অপেক্ষায় থাকে।

এর আগে, গণসংহতি আন্দোলনকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

আদালতে ওইদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল। গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী দলটির নিবন্ধন চেয়ে হাইকোর্টে এ রিট দায়ের করেন।

এ বিষয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আইনে যেসব শর্ত বলা আছে তা পূরণের সক্ষমতা গণসংহতির আছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর আবেদন করা হয়। মার্চে জানানোর কথা থাকলেও কমিশন এখন পর্যন্ত কিছু জানায়নি।

তিনি বলেন, এরপর আমরা ইসির প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলাম। নোটিশ অনুযায়ী নিবন্ধন না দেওয়ায় আমরা রিট করি। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত এই আদেশ দেন।

এফএইচ/কেএসআর/এমএস