অর্থনীতি

পরিবারসহ সালমান ও এস আলমের অনিয়ম অনুসন্ধানে কমিটি

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও তার পরিবারের অন্য সদস্যসহ তার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান এবং এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম, তার স্ত্রী, মেয়ের স্বামী ও আত্মীয়সহ তার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকাণ্ডের ফলে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, তা অনুসন্ধানে কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

Advertisement

বিএসইসির পরিচালক মোহাম্মদ আবুল হাসান, অতিরিক্ত পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক অমিত কুমার সাহা এবং সহকারী পরিচালক তৌহিদুল ইসলাম সাদ্দামের সমন্বয়ে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) এ অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৬০ দিনের মধ্যে অনুসন্ধান সম্পন্ন করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

একটি জাতীয় পত্রিকায় গত ১৪ আগস্ট ‘এস আলম গ্রুপ’ এবং ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান’-এর অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে এ অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হলো।

আরও পড়ুন ৭ ব্যাংক থেকে ৩৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পাচার করেছে বেক্সিমকো বেক্সিমকো গ্রুপের সব সম্পত্তি ক্রোক করে ‘রিসিভার’ নিয়োগে রুল

সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স ১৯৬৯-এর সেকশন ২১ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ এর ধারা ১৭ক এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে চারজন কর্মচারীর সমন্বয়ে এ অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএসইসি।

Advertisement

বিএসইসির এ সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এস আলম গ্রুপ এবং সালমান এফ রহমান কর্তৃক করা অনিয়মের অভিযোগ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সালমান এফ রহমান আশির দশক থেকেই শীর্ষস্থানীয় একজন ঋণখেলাপি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ১৯৯৬ সালে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিতে তার নাম এসেছিল।

‘তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ সুবিধা নিয়ে ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাম কাটায়। ২০১১ সালে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির পর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে সালমান এফ রহমানের ভূমিকা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল’- তদন্ত কমিটি গঠন করা সংক্রান্ত নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, দৈনিক পত্রিকাটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- এক সময়ের দেশের শীর্ষ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিকে ২০১৭ সালে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ নেয় সদ্য বিদায় নেওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ এস আলম গ্রুপ। এরপর সাড়ে সাত বছরে নামে-বেনামে ব্যাংকটি থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এই ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও এর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট রাজশাহীর নাবিল গ্রুপ। এই অর্থ ব্যাংকটির মোট ঋণের এক-তৃতীয়াংশ। ঋণের যে তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে, ব্যাংক থেকে পাচার করা অর্থের প্রকৃত পরিমাণ তার চেয়ে বেশি বলেই মনে করেন কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন এস আলম ও তার পরিবারের ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ৯১ হিসাব তলব

সংবাদে অভিযোগ করা হয়েছে, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি থেকে টাকা বের করা হয়েছে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম, তার স্ত্রী, মেয়ের স্বামী, আত্মীয়সহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে।

Advertisement

এর পরিপ্রেক্ষিতে সালমান এফ রহমান, তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ তার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান এবং এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম, তার স্ত্রী, মেয়ের স্বামী, আত্মীয়সহ তার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকাণ্ডের ফলশ্রুতিতে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, এ বিষয়ে বিশদ অনুসন্ধানের নির্দেশনা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

এমএএস/এমকেআর/এএসএম