দেওয়ানবাগ দরবার শরীফে একের পর এক হামলার মাধ্যমে বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় সুফিবাদী জনগোষ্ঠীকে বড় সংকটে ফেলার পাঁয়তারা চলছে বলে মনে করেন দেশের তরিকতপন্থিরা। এ সংকট মোকাবিলায় তরিকতপন্থিদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
Advertisement
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানায় দেওয়ানবাগ দরবার শরীফ কর্তৃপক্ষ। ‘দরবার শরীফে হামলা, ভাঙচুর-লুটপাটের প্রতিবাদে’ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, গত ৬ সেপ্টেম্বর থেকে দুটি জেলায় দেওয়ানবাগ দরবার শরীফে হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত শতাধিক ভক্ত আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন মারা গেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে দেওয়ানবাগ শরীফের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আবদুল আজিজ খলিফা।
Advertisement
তিনি বলেন, দেওয়ানবাগ শরীফ কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত নয়। মানুষের প্রতি দয়া, প্রেম, ভালোবাসা প্রদর্শন এবং নিজেদের চরিত্র গঠনের মাধ্যমে আল্লাহ ও রাসুল (সা.) এর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে এ প্রতিষ্ঠানের সব কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তারপরও কেন, কার স্বার্থে বারবার মানুষকে বিভ্রান্ত করে দেওয়ানবাগ শরীফে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হচ্ছে?।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ৬ সেপ্টেম্বর সুফি সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগীর (রহ.) প্রতিষ্ঠিত নারায়ণঞ্জ জেলার বন্দর থানার দেওয়ানবাগ গ্রামে অবস্থিত বাবে জান্নাত দেওয়ানবাগ শরীফে হামলা চালানো হয়। ৮ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলাধীন বাবে বরকত দেওয়ানবাগ শরীফে হামলা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, লুটপাট এবং সংশ্লিষ্ট দরবার দুটিতে অবস্থানরত নিরীহ ভক্তদের ওপর দুর্বৃত্তরা শারীরিক নির্যাতন চালায়। এতে শতাধিক ভক্ত মারাত্মক আহত হন। একজন মারা যান।
যে গোষ্ঠী দেওয়ানবাগ দরবার শরীফে এখন হামলা চালাচ্ছে, তারা এর আগে ১৯৯০ ও ১৯৯৯ সালেও হামলা চালিয়েছিল অভিযোগ করে আবদুল আজিজ খলিফা বলেন, তরিকতপন্থিদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সংকট দেওয়ানবাগ শরীফের একার নয়। এ সংকট বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় সুফিবাদী জনগোষ্ঠীর। সব মতানৈক্য ভুলে আসুন আমরা একত্রিতভাবে শান্তি বিনষ্টকারী এ জালিমদের প্রতিহত করি। অলি-আল্লাহর এ পুণ্যভূমিতে শান্তি-সাম্য ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করি।
সংবাদ সম্মেলনে দেওয়ানবাগ শরীফের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবদুস সালাম, ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. দেওয়ান ফারুকুল ইসলাম, বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জন ডা. মো. আমিনুল ইসলাম, আল-কোরআন গবেষণা কেন্দ্রের সদস্য এমরান হোসাইন মাজহারী ও ইসলামী আলোচক সাব্বির আহমদ ওসমানী প্রমুখ।
Advertisement
এএএইচ/ইএ/এমএস