চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে শিপইয়ার্ডে বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ এবং সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসা খরচ এবং পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এ নোটিশ পাঠিয়েছে।
নোটিশে এসএন করপোরেশন শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের সব কার্যক্রম বন্ধেরও দাবি জানানো হয়েছে। নোটিশে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক (ডিজি), বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক, বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং এসএন করপোরেশন শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের স্বত্বাধিকারীকে বিবাদী করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শিপইয়ার্ডে বিস্ফোরণে দগ্ধ একজনের মৃত্যু, আশঙ্কাজনক সাতজনশিপইয়ার্ডে বিস্ফোরণ: দগ্ধদের সবার শ্বাসতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্তশিপ ইয়ার্ডে জাহাজ কাটার সময় বিস্ফোরণ, দগ্ধ ১২লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, অতিমাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ জাহাজভাঙা কার্যক্রমের অব্যাহত দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেলা উচ্চ আদালতে বেশ কয়েকটি জনস্বার্থমূলক মামলা দায়ের করেছে যা চলমান মামলা হিসেবে আদালতে বিবেচিত রয়েছে। আদালত এসব মামলার রায় ও আদেশের মাধ্যমে শ্রমিকদের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়া জাহাজভাঙা ইয়ার্ডগুলো যাতে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে সে বিষয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেন।
Advertisement
আদালতের সুস্পষ্ট রায় ও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও ৭ সেপ্টেম্বর জাহাজভাঙার সময়ে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ১২ জন শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন মর্মে দেশের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, আহত ব্যক্তিদের ১২ জনকেই প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আশঙ্কাজনক বিবেচনায় তাদের ৮ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। দগ্ধ শ্রমিকদের শ্বাসনালীসহ শরীরের ২৫ থেকে ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে। এরই মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকায় একজন শ্রমিক মারা গেছেন।
এসএন করপোরেশন শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে ২০১০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে ১৩ বার। এসব ঘটনায় প্রাণ হারায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত প্রশিক্ষণবিহীন ১২ জন শ্রমিক ও আহত হয় ১৩ জন।
একই ইয়ার্ডে বারবার এ ধরনের ঘটনা প্রমাণ করে যে, প্রচলিত আইন ও আদালতের নির্দেশ অমান্য করে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে জাহাজভাঙা অব্যাহত রয়েছে।
Advertisement
মালিকপক্ষ হতে শ্রমিক অধিকার নিশ্চিতকরণে কার্যত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি, মারাত্মক এ ঝুঁকিপূর্ণ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনোরূপ তদারকির ব্যবস্থাও নেই। সর্বোপরি এ ধরনের ঘটনার আনুষ্ঠানিক তদন্তের বিধান থাকা সত্ত্বেও কমিটি কর্তৃক পরিদর্শন/পর্যবেক্ষণ করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি।
এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে প্রচলিত আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ ও আদালতের আদেশের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতেই মূলত এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
এফএইচ/এসএনআর/জেআইএম