মার্কিন বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানির কাজ বাগিয়ে নিতে সাব ঠিকাদারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মৌলভীবাজার জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে।
Advertisement
এ ঘটনায় ঠিকাদার বাদশা মিয়া কাজল থানায় নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। জিডিতে উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে কাজ বাগিয়ে নিতে মোবাইল ফোনে ও লোকজন পাঠিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেন তিনি।
গত ৩ সেপ্টেম্বর শ্রীমঙ্গল থানায় জিডিটি করেন বাদশা মিয়া। জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ এনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি এম নাসের রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান বরাবর চিঠি দিয়েছেন তিনি।
বাদশা মিয়া উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের সিরাজনগর এলাকার শেখ আব্দুল বারিকের ছেলে ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি।
Advertisement
মার্কিন বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানি শেভরন বাংলাদেশের কাছ থেকে কালাপুর এলাকায় একটি কাজের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার হোসেন লিমিটেডকে নিযুক্ত করা হয়। গত ১৯ আগস্ট তারা সাব ঠিকাদার হিসেবে বাদশা এন্টারপ্রাইজ নামের স্থানীয় একটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজের জন্য চুক্তি করেন।
বাদশা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বাদশা মিয়া কাজল থানায় করা জিডিতে উল্লেখ করেন, গত ১৯ আগস্ট মৌলভীবাজার গ্যাস ফিল্ড এমবি-৯ ও এমবি- ৫ এর মীর আক্তার কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে সাব-কন্ট্রাক্টে একটি কাজের চুক্তিনামায় সই করি। কাজ পাওয়ার পর ২২ আগস্ট বিকেল ৫টা ২০ থেকে ৫টা ২৫ মিনিটের মধ্যে একটি নম্বর থেকে কল করে মৌলভীবাজার জেলা যুবদল সভাপতি জাকির হোসেন আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমাকে হুমকি-ধামকি দিয়ে কাজটি উনি করবেন বলে জানান। পরে জাকির হোসেন চুক্তিনামায় সইকারী প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার হোসেন লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার আব্দুল মান্নানের সঙ্গে কথা বলে কাজ না দেওয়ার জন্য বলেন। এছাড়া তিনি লোক পাঠিয়ে কোম্পানির ওই কর্মকর্তাকে বারবার নিষেধ করেন এবং শ্রীমঙ্গল শহরের তার নিজস্ব লোক দিয়ে আমাকে হুমকি-ধমকি দেন। আমি একজন ব্যবসায়ী। আমি বিএনপির সক্রিয় কর্মী এবং দীর্ঘদিন ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। বর্তমানে শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপি সহ-সভাপতি।
জিডিতে বাদশা মিয়া আরও উল্লেখ করেন, আমি নিরুপায় হয়ে বিষয়টি মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান, মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ও বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরীকে জানাই। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ন্যায় ও সুষ্ঠু বিচার প্রার্থনা করেন তিনি।
বাদশা মিয়া বলেন, সুবিচারের জন্য বিএনপির সিনিয়র নেতাদের লিখিত ও মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছি। এ ঘটনায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
Advertisement
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত জাকির হোসেন উজ্জ্বলকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে জেলা যুবদলের দপ্তর সম্পাদক হাবিবুর বাশার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যুবদল সভাপতি জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করা হয়।
মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি সভাপতি এম নাসের রহমান বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কড়া নির্দেশনা দলের কেউ যেন বিশৃঙ্খলা না করেন। আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং দলের কেন্দ্রীয় অফিসে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আলী মাহমুদ বলেন, থানায় জিডি করা হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে।
ওমর ফারুক নাঈম/এসআর/জিকেএস