ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত অর্থাৎ ৮ মাসে মারা গেছেন ৯২ জন। গত বছর একই সময়ে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৬৯১ জন। এ হিসাবে গত বছরের তুলনায় ডেঙ্গুতে এবার ৫৯৯ জন কম মারা গেছেন।
Advertisement
মশাবাহিত অন্যান্য রোগ বিষয়ক জাতীয় কমিটির সভায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে এ সভা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।
সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানানো হয়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকা মহানগরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৬৩ জন। এ সময়ে ঢাকা মহানগরের বাইরে সারাদেশে মারা গেছেন ২৯ জন।
গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ঢাকা মহানগরে ৪৯৭ জন মারা যান। দেশের অন্যান্য স্থানে মৃতের সংখ্যা ছিল ১৯৪ জন। গত বছর এ সময়ে ডেঙ্গুতে মোট মারা যান ৬৯১ জন।
Advertisement
চলতি বছরের ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৪ হাজার ৮০৪ জন। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরে ৬ হাজার ২০৯ জন ও ঢাকা মহানগরের বাইরে ৮ হাজার ৫৯৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন।
গত বছরের (২০২৩ সালে) ১ জানুয়ারি থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল এক লাখ ৪০ হাজার ৭১১ জন। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরে ৬৪ হাজার ১৭২ জন ও ঢাকা মহানগরের বাইরে ছিল ৭৬ হাজার ৫৩৯ জন।
আরও পড়ুনডেঙ্গুতে আরও তিনজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৪০৩আন্দোলনে বন্ধ ১৯ ওষুধ কারখানা, উৎপাদন ব্যাহতবৈঠক শেষে স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রথম দিকে ডেঙ্গু নিয়ে দেশে একটা দিশেহারা ভাব ছিল। তবে আমরা ক্রমান্বয়ে একটা সহনীয় পর্যায়ে এসেছি। আমাদের অর্জন তখনই হবে, যখন একটি মৃত্যুও হবে না। এখনো আমরা সে পর্যায়ে পৌঁছাতে পারিনি।’
তিনি বলেন, ‘৭ সেপ্টেম্বর (শনিবার) দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একজন মারা গেছেন। কিন্তু গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর মারা গিয়েছিলেন ২০ জন।’
Advertisement
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ
এটা নিয়ে আমাদের আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্যমাত্রা হবে একজনেরও যাতে মৃত্যু না ঘটে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘এ রোগের প্রতিরোধই কাজ করে ৯০ শতাংশ। আর ১০ শতাংশ হচ্ছে চিকিৎসা। চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমরা একটা ভালো পর্যায়ে আছি। তবে সচেতনতার জায়গায় আমরা বেশ পিছিয়ে আছি। গ্রামে সচেতনতা অনেক কম।’
সচেতনতা বাড়াতে নানান পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে হাসান আরিফ বলেন, ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে সারা বছর একটা কর্মসূচি নেওয়ার ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি। মশার প্রজননটা যাতে না হয়, গবেষণা করে এমন কোনো ওষুধ বা কিছু বের করা যায় কি না, সেটা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বৈঠকে পরিবেশ সচিব বলেছেন, প্রাকৃতিকভাবে জীববৈচিত্র্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে আজ মশার উপদ্রব হচ্ছে। আগে যেসব মাছ বা ব্যাঙের খাদ্য ছিল লার্ভা, সেগুলোর সংখ্যা খুব কমে গেছে। জীববৈচিত্র্য আগের জায়গায় কীভাবে ফিরিয়ে এনে এদের সংখ্যা বাড়ানো যায় সেটা নিয়ে আলাপ আলোচনা হয়েছে।’
আরএমএম/কেএসআর/জেআইএম