দেশজুড়ে

রাত নামলেই পদ্মার বুকে চলে বালু লুটের মহোৎসব

দিনের আলোতে আনাগোনা না থাকলেও রাত নামলেই শুরু হয় পদ্মা নদীর বুক থেকে বালু লুটের উৎসব। পদ্মানদীর ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ও নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলেন প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তি। অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলার কারণে এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে নদীভাঙন। এতে সহায় সম্পদ হারাচ্ছেন এলাকাবাসী। অবিলম্বে অপরিকল্পিতভাবে এই বালু তোলা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

Advertisement

স্থানীয়দের অভিযোগ, ফরিদপুর নদী বন্দরের কয়েকশ মিটারের মধ্যেই তোলা হচ্ছে বালু। এতে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে বন্দরটিও। অপর প্রান্তের আইজুদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী ও নাজির বিশ্বাসের ডাঙ্গী গ্রামসহ অন্তত চার-পাঁচটি গ্রামের ফসলি জমিও ভেঙে যাচ্ছে।

এলাকাবাসী জানান, বছরের পর বছর ধরে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলার কারণে নদী ভেঙে কয়েক কিলোমিটার অভ্যন্তরে চলে এসেছে। তারা দাবি করেন, নদীভাঙনে এরইমধ্যে অন্তত তিনটি গ্রাম চলে গেছে। আরও অন্তত ১০টি গ্রামের অনেকটাই ভেঙে গেছে। সম্প্রতি জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কার্যক্রম কিছুটা শিথিল থাকার সুযোগে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বালু ব্যবসায়ীরা। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে তারা বিভিন্ন জেলা থেকে ড্রেজার ভাড়া করে এনে বালু তুলছেন।

স্থানীয়দের দাবি, মো. আলম শেখ নামের বালু ব্যবসায়ী নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের গোলডাঙ্গীতে নির্মিত সেতু সংলগ্ন এলাকায় বালু খালাস করায় সেতুটিও ঝুঁকিতে পড়বে।

Advertisement

নদীপাড়ের বাসিন্দা আব্দুর রব ও মো. রনিসহ কয়েকজন জানান, মো. মজিবর শেখ, মো. আলম শেখ, মো. মোফাজ্জেল হোসেন ও মো. আনোয়ার হোসেন আবু ফকির, মো. শাওন শেখ ও রাজা ফকিরের নেতৃত্বে কয়েকটি ড্রেজার নদীর বুকে বিভিন্ন জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ বালু তোলার বিষয়ে কথা বলতে গেলেও হেনস্তার শিকার হতে হয়। ফলে ক্ষতির শিকার হয়েও ভয়ে কেউই মুখ খুলতে চান না।

এ ব্যাপারে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত আলম শেখ, মজিবর শেখ, আবু ফকির। তারা দাবি করেন, তারা বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত না। রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এমন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রায়শই ব্যবস্থা নেওয়া হয় এসব বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে। যদিও স্থানীয়দের লিখিত অভিযোগ না থাকায় কারা জড়িত রয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। এতে সরাসরি কারো বিরুদ্ধে মামলা করাও যাচ্ছে না।

এন কে বি নয়ন/এফএ/এমএস

Advertisement