ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে গ্রেফতার হয়েছেন গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া উপজেলার সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন তিনি। বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতারের সময় বিমলের কাছে ভারতের জাল আধার কার্ড পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাসের এক আত্মীয়। তিনি জানান, যৌথবাহিনীর অভিযান ও এলাকার মানুষের ভয়ে ভারতে পালিয়ে যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস।
এই আত্মীয় আরও বলেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস খুলনার এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন। সম্প্রতি যৌথ বাহিনীর অভিযান ঘোষণার পর থেকে আতঙ্কে ছিলেন তিনি। এলাকার মানুষের ভয়ে বাড়িতেও ফিরছিলেন না। বুধবার থেকে যৌথবাহিনীর অভিযান শুরুর খবর ছড়িয়ে পড়লে আগের দিন মঙ্গলবার দালালের মাধ্যমে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান।
Advertisement
ওইদিনই বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে অনুপ্রবেশ করেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। পরে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) পশ্চিমবঙ্গের স্বরূপনগর থানার তরালী সীমান্ত থেকে তাকে আটক করে। পরে তাকে হাকিমপুর ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ঘটনায় ভারতের স্বরূপনগর থানার উপ-পরিদর্শক নেতিন্তি সিংহাচলাম বাদী হয়ে বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মামলা করেন। যাতে অভিযোগ আনা হয়, অবৈধভাবে ভারতের উত্তর ২৪ পরগণার স্বরূপনগর থানার তরালী সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করেন তিনি।
স্বরূপ নগর থানার একটি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনার তরালী সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাসসহ আরও ৩০ জন আটক হন। তারা সবাই বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভারতে যান। দালালের মাধ্যমে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে কলকাতায় প্রবেশের পরিকল্পনা ছিল তাদের।
জিজ্ঞাসাবাদে ভারতের পুলিশের কাছে বিমল কৃষ্ণ বলেন, বাংলাদেশে যৌথবাহিনীর অভিযান চলছে। সেই তালিকায় তার নাম আছে বলে জানতে পেরেছেন। এছাড়া একটানা ১১ বছর উপজেলা চেয়ারম্যান থাকায় বিরোধীরা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। তার ওপর হামলার আশঙ্কা রয়েছে।
Advertisement
এদিকে বিমল কৃষ্ণের গ্রেফতারের খবর কোটালিপাড়ায় ছড়িয়ে পড়লে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা মিষ্টি বিতরণ করেন।
কোটালিপাড়ার স্থানীয় এক যুবক জানান, টানা ১১ বছর বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। এসময় তিনি তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে গেছেন। তার মতের বাইরে গেলে নানাভাবে অত্যাচার-নির্যাতন চালাতেন। তিনি অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন।
কোটালিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ আলম জানিয়েছেন, বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কোটালিপাড়া থানায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।
জেডএইচ/জেআইএম