দেশজুড়ে

সাড়ে চার ঘণ্টা বিলম্বে শুরু হলো যুবদলের সভা, নেতা-কর্মীদের ক্ষোভ

যশোরে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন দলীয় নেতাকর্মীদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দলের কেউ সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তথা যুবদলের সাংগঠনিক অভিভাবক তারেক রহমানের দলের নেতাকর্মীরা শৃঙ্খলাবিরোধী এবং সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে কেবল সাংগঠনিক ব্যবস্থাই নয়, প্রয়োজনে তাকে আইনের হাতে তুলে দেবেন।

Advertisement

শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে তিনি খুলনা বিভাগীয় যুবদল আয়োজিত ‘বৈষম্যহীন, নিরাপদ, মানবিক বাংলাদেশ গড়ায় জাতীয়তাবাদী যুবদলের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। যশোর পিটিআই অডিটোরিয়ামে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে বিকেল ৪টার অনুষ্ঠান রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়।

সভায় নুরুল ইসলাম নয়ন দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, এই মুহূর্তে কোনো অনুপ্রবেশকারী দলে ঢুকে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা যেন সৃষ্টি করতে না পারে তার জন্য সকলের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। বিগত ১৭ বছর তারেক রহমানের নেতৃত্বে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য আমরা আন্দোলন করেছি। আজ সেই আন্দোলন তার প্রাথমিক ধাপ অতিক্রম করেছে। আগামীতে একটি স্বচ্ছ অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের লক্ষ্যে অবিচল থাকবো। সেই নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দলের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ সহায়তা করবো।

যশোর জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা। সভায় খুলনা বিভাগের সকল জেলা এবং উপজেলার যুবদলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

এদিকে তিন দফা সময় পরিবর্তন করে খুলনা বিভাগীয় যুবদলের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। যশোরে ‘খুলনা বিভাগীয় বৈষম্যহীন নিরাপদ মানবিক বাংলাদেশ গড়ায় জাতীয়তাবাদী যুবদলের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা শুরুর কথা ছিল শুক্রবার বিকেল চারটায়। সভাস্থল যশোরের পিটিআই মিলনায়তনে পূর্বনির্ধারিত সময়ের আগেই উপস্থিত হন খুলনা বিভাগের ১০ জেলার আমন্ত্রিত কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরা। তবে আয়োজকদের অব্যবস্থাপনার কারণে চারটার অনুষ্ঠান তিন দফা সময় পরিবর্তন করে শুরু হয় রাত সাড়ে ৮টায়। দীর্ঘসময় অপেক্ষা করে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা। অনেককেই ক্ষোভ নিয়ে অনুষ্ঠান স্থল থেকে চলে যেতে দেখা গেছে। আবার যারা দলের শীর্ষ পদধারী তারা চলে যেতে না পারলেও ক্ষোভ নিয়েই ধৈর্য ধরে অনুষ্ঠান শেষ করেন। সরেজমিনে ঘুরে ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে যুবদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সংগঠনবিরোধী কার্যক্রমের অভিযোগ ওঠে। দলে শৃঙ্খলা ফেরাতে এরইমধ্যে জেলায় জেলায় যুবদলের নেতাকর্মীদের বহিষ্কারও করা হয়েছে। তাই দলের শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং দল পুনর্গঠনে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয় যশোরে।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন। শহরের পিটিআই মিলনায়তনে আয়োজিত এই মতবিনিময় সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল বিকেল চারটায়। পূর্ব নির্ধারিত সময়ের আগেই উপস্থিত হন খুলনা বিভাগের সকল জেলার শীর্ষ নেতাকর্মী, কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরা। তবে অব্যবস্থাপনার কারণে বিকেল চারটায় অনুষ্ঠান শুরু করতে পারেননি আয়োজকরা। পরবর্তীতে অনুষ্ঠান শুরুর সময় ঘোষণা করা হয় সন্ধ্যা ৭টায়। সন্ধ্যা ৭টায় শুরু না হওয়ায় পরবর্তীতে আবারো আয়োজকরা তৃতীয় দফায় সময় ঘোষণা করেন আটটার দিকে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর আটটার সময়ও সভা শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেতাকর্মীরা। অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে সভাস্থল ত্যাগ করে চলে যান। কেউ কেউ অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার অপেক্ষার প্রহর গুণতে গুণতে অডিটোরিয়ামের চেয়ারে ঘুমিয়ে পড়েন। তবে পদধারী শীর্ষনেতারা চলে না যেতে পারলেও ক্ষোভ নিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করেন। সভাস্থলের অডিটোরিয়ামের বাইরে গিয়ে একজেলার নেতাকর্মীরা অন্যজেলার নেতাকর্মীদের সঙ্গে হট্টগোল ও আয়োজকদের প্রতি ক্ষোভ করেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবদলের নাম না প্রকাশে শীর্ষ দুই নেতা বলেন, ‘সেই সকালে বাড়ি থেকে বের হয়েছি। এরপর দুপুরের আগে চুয়াডাঙ্গা থেকে যশোরে এসেছি। দুপুরে আয়োজকরা খাবার দিলেও প্রোগ্রাম সঠিক সময়ে শুরু করেনি। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা, তারপরও সভা শুরু হয়নি। শেষ মেষ রাত ৮টার পরে শুরু হয়। দেরি করে অনুষ্ঠান শুরু হওয়াতে অনেকেই চলে গেছে।’

যশোর জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, বাগেরহাট জেলার যেসব কাউন্সিলর ও ডেলিগেট নেতাকর্মীরা আমন্ত্রিত ছিল, তাদের অনেকেই দলীয় সংগঠনবিরোধী কার্যক্রমের অভিযোগে গতকাল বহিষ্কার হয়েছে। ফলে তারা আসতে পারেনি। তালিকা নিয়ে গোলমাল হওয়ায় বাগেরহাট জেলার নেতাকর্মীদের দেরি করে আসার কারণে অনুষ্ঠান শুরু করতে দেরি হয়েছে। তবে দলীয় নেতাকর্মীদের কোনো সমস্যা হয়নি। এমনকি কেউ চলে যায়নি বলেও দাবি করেন তিনি। মিলন রহমান/এফএ/জিকেএস

Advertisement