দেশজুড়ে

নামছে বন্যার পানি, তীব্র হচ্ছে ভাঙন

মিরসরাইয়ে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। আতঙ্কে রয়েছেন ফেনী নদীর তীরবর্তী গ্রামের মানুষ।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বছরের পর বছর ফেনী নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে শতশত বসতবাড়ি ও হাজার হাজার একর কৃষিজমি। কয়েক বছর নদীভাঙন বন্ধ থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ের বন্যায় অতিরিক্ত পানির চাপ ও স্রোতে নদীর মিরসরাই অংশে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে।

উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের আমলীঘাট থেকে শুভপুর পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে একাধিক জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে মোল্লা বাড়ি, তিলকের খাল, চোধুরী বাড়ির প্রায় অর্ধশত বসতঘর ভাঙনের কবলে পড়ছে। ফেনীর ছাগলনাইয়া অংশে নতুন চর জাগায় এ অংশে স্রোত তীব্র হচ্ছে। এতে নদীর তীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

অলিনগর গ্রামের আরমান জানান, ভাঙনের পর আমাদের ভাগ্য গড়া হবে কিনা সেটি কেউ বলতে পারেন না। বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে আমরা আরেকটি সঙ্কটে পড়েছি।

Advertisement

আমেনা বেগম বলেন, নদী ভিটেমাটি ভাসিয়ে নিলে কোথায় আশ্রয় হবে জানি না। আমার কপালে কী আছে ওপরওয়ালা ছাড়া কেউ জানে না।

ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া ব্লক বন্যায় তলিয়ে গেছে। ভাঙনকবলিত মানুষের পুনর্বাসন এবং শক্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থায় সরকারের কোনো উদ্যোগও নেই। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে পুরো গ্রাম বিলীন হয়ে যাবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী ও ধুম ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে করেরহাট ইউনিয়নের অলিনগর, পশ্চিম জোয়ার, ধুম ইউনিয়নের মোবারকঘোনা ও শুক্কুরবারইয়াহাট গ্রামের বাসিন্দারা ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছেন।

এ ইউনিয়নের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান আবুল কাশেম কালা বলেন, ৭৫ বছর বয়সে এমন বন্যা দেখিনি। এবার এলাকার মানুষ ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পানি নেমে যাওয়ায় নদীভাঙন মানুষের মাঝে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।

Advertisement

পানি উন্নয়ন বোর্ডের মিরসরাই উপজেলার দায়িত্বরত কর্মকর্তা আবদুল কাদের, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে ঊর্ধ্বতনকে জানানো হবে।

এ বিষয়ে মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন বলেন, নদীভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে শিগগির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখনই ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে বিলীন হতে পারে শত শত বসতঘর।

এম মাঈন উদ্দিন/আরএইচ/এএসএম