দেশজুড়ে

চাঁদপুরে এক উপজেলাতেই নষ্ট সাড়ে ৬ কোটি টাকার ফসল

চাঁদপুরের এক উপজেলাতেই বন্যায় কৃষকদের সাড়ে ৬ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এতে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে কৃষকদের মাঝে।

Advertisement

গত কয়েকদিন শাহরাস্তি উপজেলার সূচিপাড়া উত্তর, সূচিপাড়া দক্ষিণ, রায়শ্রী উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়ন এবং আশপাশের এলাকা ঘুরে ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের জমিগুলো চোখে পড়ে। এসব এলাকায় বড় বড় জমি জুড়ে রয়েছে রোপা আউশ। তবে অধিকাংশই পানির নীচে।

উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে জানা যায়, শাহরাস্তি উপজেলায় সাড়ে ৪ হাজার কৃষকের ৩৪১ হেক্টর জমিতে আউশসহ অন্যান্য ফসল চাষাবাদ করা হয়। কিন্তু বন্যায় ক্ষতি হয়েছে এসব ফসল। ফলে কৃষকদের ৬ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

কৃষি বিভাগ আরও জানায়, বন্যায় উপজেলার ১২৯ হেক্টর জমির রোপা আউশ, ২০ হেক্টর বীজতলা, আবাদকৃত আমন ১৩৩ হেক্টর ও শাক-সবজির ৫৯ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ৪ হাজার ৩৪১ জন।

Advertisement

শাহরাস্তি রায়শ্রী উত্তর ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকা উনকিলা গ্রামের কৃষক কেরামত আলী বলেন, আমার এক একর জমিতে আউশের আবাদ ছিল। কিন্তু এখন সবই শেষ। বসতঘর ও রাস্তায় পানি। আমাদের এই ক্ষতির কি হবে বলতে পারছি না।

একই এলাকার দুলাল নামে আরেক কৃষক বলেন, এবছর এক একরের বেশি জমিতে রোপা আউশ আবাদ করি। জমিগুলো এখন পানিতে তলিয়ে। গাছের চিহ্নও দেখা যায় না। ঋণ করে টাকা নিয়ে জমিতে বিনিয়োগ করেছি।

শহীদ উল্লাহ নামে আরেক কৃষক বলেন, ১৯৮৮ ও ২০০৪ সালে বন্যা হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের হয়নি। এবারের বন্যায় আমাদের ফসলসহ সব ধরনের ক্ষতি হয়েছে। বসতঘর, রাস্তা ও ফসল সবকিছু শেষ। বহু কৃষকের ধান পচে গেছে। অনেকেই পানির নীচ থেকে ধান কেটেছেন। কিন্তু ধান খুবই কম। সব মাটিতে পড়ে গেছে।

সূচিপাড়া উত্তর ইউনিয়নের দইকামতা গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, গত ১০ দিন ধরে তাদের এলাকার সব ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে আছে। পানির উচ্চতা প্রায় ৫ ফুট। ফসলের এই ধরনের ক্ষতি গত এক দশকেও হয়নি। আউশ কেউ কাটতে পারেনি। আমনের বীজতলা পানির নীচে। শাক-সবজি কিছু অবশিষ্ট নেই।

Advertisement

শাহরাস্তি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়শা আক্তার বলেন, উপজেলার বন্যা কবলিত ইউনিয়নের মাঠ জরিপে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত সাড়ে ৪ হাজার কৃষকের তথ্য পেয়েছি। রোপা আউশসহ বিভিন্ন ফসলে ৬ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকার প্রাথমিক ক্ষতির আশঙ্কা করছি। এসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবো। সব কৃষকদের প্রণোদনার আওতায় নিয়ে আসা হবে।

শরীফুল ইসলাম/জেডএইচ/জিকেএস