আন্তর্জাতিক

আরাকান আর্মিসহ ৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষণা জান্তার

মিয়ানমারে প্রধান তিনটি জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা। গত বছর থেকে এই গোষ্ঠীগুলোর সদস্যরাই সেনাবাহিনীকে হটিয়ে দেশটির উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা দখলে নিয়েছেন।

Advertisement

জান্তা পরিচালিত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) জানিয়েছে, আরাকান আর্মি (এএ), মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) এবং টা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মিকে (টিএনএলএ) ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার।

আরও পড়ুন>>

মিয়ানমারে তীব্র সংঘাত/ বাংলাদেশে ঢুকতে পারে আরও রোহিঙ্গা রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পথে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনের বাসিন্দাদের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা ত্যাগের নির্দেশ

দেশটির সন্ত্রাসবিরোধী আইন অনুসারে, ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষিত এসব গোষ্ঠীর সদস্য হওয়া বা সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা বেআইনি বলে বিবেচিত হবে।

Advertisement

সেনাবাহিনীর স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের (এসএসি) চেয়ারম্যান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, যারা এই ‘সন্ত্রাসীদের’ সঙ্গে যোগাযোগ করে, তারাও ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ করছে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। তাদের হটাতে গত বছরের শেষের দিকে ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স গঠন করে তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি, এমএনডিএএ এবং টিএনএলএ। এরপর একযোগে সামরিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে তীব্র আক্রমণ শুরু করে তারা।

চীন ও থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী অঞ্চল এবং বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যে বড় ধরনের সাফল্য পেয়েছে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স।

আরও পড়ুন>>

Advertisement

কর্মীদের বেতন বাড়ালেই মালিকদের জেলে দিচ্ছে মিয়ানমার বিপাকে পড়ে এখন রোহিঙ্গাদের কাজে লাগাচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী বাংলাদেশে পালানোর সময় মিয়ানমারে ড্রোন হামলায় বহু রোহিঙ্গা নিহত

এমনকি, সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেওয়া বেসামরিক নাগরিকদের সংগঠন পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেসও (পিডিএফ) মধ্য মান্দালয় অঞ্চলে বিভিন্ন এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়েছে।

এর আগে, ২০২১ সালের মে মাসে মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত জনপ্রতিনিধি ও অধিকারকর্মীদের নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যের সরকারকে (এনইউজি) ‘সন্ত্রাসী’ খেতাব দিয়েছিল দেশটির সামরিক শাসকরা।

তারও আগে, রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযুক্ত আরাকান আর্মিকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করেছিল অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন তৎকালীন নির্বাচিত সরকার।

তবে ক্ষমতা দখলের দুই মাস পরেই আরাকান আর্মির ‘সন্ত্রাসী’ খেতাব তুলে নেয় সামরিক জান্তা। তখন দুই পক্ষের মধ্যে একটি শান্তি সমঝোতা হয়েছিল, যা পরে ভেস্তে যায়।

স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা দ্য অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারসের তথ্যমতে, মিয়ানমারে ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে সংঘাতে অন্তত ৫ হাজার ৫৯৯ জন নিহত হয়েছেন। জান্তা বাহিনীর হাতে বন্দি রয়েছেন ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ।

সূত্র: আল-জাজিরাকেএএ/