ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠদের পদত্যাগের হিড়িক পড়ে। যদিও মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রায় এক মাসে নির্বাচন কমিশনে কোনো পরিবর্তন আসেনি। তবে অনেকের মতে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল ও চার কমিশনারের পদত্যাগ এখন সময়ের ব্যাপার।
Advertisement
আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সিইসি ও অন্য কমিশনাররা পদত্যাগ করতে পারেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। এদিন রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে তারা পদত্যাগ করতে পারেন বলে জানা গেছে।
ইসির একাধিক সূত্র জানায়, কোনো কিছুর ব্যত্যয় না ঘটলে বৃহস্পতিবার পদত্যাগের ঘোষণা আসবে। পদত্যাগের জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন কমিশনাররা। নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বেশ কয়েকদিন অফিস করেননি। এমনকি তিনি ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিদায় নেন বলে জানা গেছে।
সূত্র আরও জানায়, শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পরদিন সিইসিসহ সব কমিশনার বসে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ইসি মো. আলমগীর এ সিদ্ধান্ত থেকে সবাইকে সরিয়ে আনেন। আজ বুধবার সিইসিসহ চার কমিশনার অফিস করেছেন। সারাদিন সাংবাদিকরা নানান বিষয়ে জানতে চাইলেও কোনো কমিশনার পদত্যাগের বিষয়ে মুখ খোলেননি।
Advertisement
তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) অফিস থেকে বের হওয়ার সময় তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। জবাবে সিইসি বলেন, ‘নো কমেন্টস। আগামীকাল দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলন করবো, তখন বিস্তারিত জানাবো।’
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কখন দেখা হবে? এমন প্রশ্নে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘কালই দেখা হবে। আপনাদের সব কিছুই জানাবো কাল।’
এদিকে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে ইসি সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র–জনতা। আজ বুধবার তারা নির্বাচন কমিশনের সামনে এই বিক্ষোভ করেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে সংস্কার করতে হবে। কমিশনকে অবশ্যই স্বাধীন করতে হবে এবং তাদের সংস্কার করতে হবে। এ দাবি আমরা আগে থেকেই জানিয়েছি। প্রধান উপদেষ্টা থেকে শুরু করে আমরা অন্য উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করে বলেছি কমিশন সংস্কার করতে হবে। নির্বাচন কমিশন সংস্কার না করলে কোনোদিনই বাংলাদেশে সঠিক ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।’
Advertisement
তিনি আরও বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশনের সংস্কার দাবি করছি। এই নির্বাচন কমিশন যেভাবে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে সহযোগিতা করেছে, তাদের দিয়ে সঠিক নির্বাচন হবে না।’
এমওএস/কেএসআর/জিকেএস