দেশজুড়ে

২৯ দিন পর সাব্বিরের মরদেহ উত্তোলন, ছেলেকে দেখতে মায়ের আহাজারি

লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলা-গুলিতে নিহিত শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রাসেলের মরদেহ কবর থেকে তোলা হয়েছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে ময়নাতদন্তের জন্য দাফনের ২৯ দিন পর মরদেহ তোলা হলো।

Advertisement

এসময় সাব্বিরে মা ও স্বজনদের আহাজারিতে পুরো এলাকা ভারী হয়ে ওঠে। শোকে নিস্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন তার বাবা আমির হোসেন। মা মায়া বেগম বার বার চেষ্টা করেছেন ছেলের মুখ দেখার, কিন্তু সুযোগ হয়নি।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সমসেরাবাদ এলাকায় লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের পাশে অবস্থিত মনির উদ্দিন পাটোয়ারী জামে মসজিদের কবরস্থান থেকে সাব্বিরের মরদেহ তোলা হয়।

এসময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মজিবুর রহমান ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোবারক হোসেন উপস্থিত ছিলেন। তাদের তত্ত্বাবধানেই ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পুনরায় দাফন করা হবে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, ৪ আগস্টে আন্দোলনে নেমে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান সাব্বির। এরপর ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার মরদেহ দাফন করে স্বজনরা।

১৪ আগস্ট সাব্বিরের বাবা আমির হোসেন বাদী হয়ে ৯১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ২০০ জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুকে প্রধান আসামি করা হয়।

১৫ আগস্ট মামলাটি আদালতে উপস্থাপন হয়। এতে অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি অঞ্চল সদর আদালতের বিচারক আবু নোমান ময়নাতদন্তের জন্য সাব্বিরের মরদেহ উত্তোলনের আদেশে দেন। আদালতের আদেশ অনুযায়ী জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহানের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মজিবুর রহমানের উপস্থিতিতে মরদেহ উত্তোলন করা হয়।

সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোবারক হোসেন বলেন, মামলার তদন্তের স্বার্থে ময়নাতদন্তের জন্য সাব্বিরের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে ফের দাফন করা হবে।

Advertisement

নিহত সাব্বির সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে ও দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। ৪ আগস্ট আন্দোলনে গিয়ে লক্ষ্মীপুরের মাদাম ব্রিজ ও তমিজ মার্কেট এলাকায় সাব্বিরসহ চার শিক্ষার্থী মারা যান। ওইদিন আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গুলিতে শতাধিক ছাত্র-জনতা আহত হয়েছিলেন।

কাজল কায়েস/জেডএইচ/এমএস