লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় মৎস্য প্রজেক্টে পানির মধ্যে উঁচু করে বস্তার মাধ্যমে ভাসমান লাউ ও সবজি চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন মো. মেহেদী হাসান মধু। তার এ ব্যতিক্রমী চাষাবাদে বাড়তি আয়ের স্বপ্ন দেখছেন।
Advertisement
জানা যায়, মো. মেহেদী হাসান মধু কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়নের শ্রুতিধর গ্রামের ওসমান গনির ছেলে। গত বছর মাস্টার্স শেষ করেছেন। তিনি চাকরির পেছনে না ছুটে ৭০ শতাংশ জমিতে মাছের ঘের তৈরি করেন। সেখানে আধুনিক পদ্ধতিতে শুরু করেন মাছ চাষ। পাশাপাশি কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী মৎস্য প্রজেক্টের চারপাশে বিভিন্ন শাক-সবজি চাষ ও পানির ওপরে মাটি উঁচু করে বস্তায় থাই জাতের লাউ চাষ শুরু করেন। তার ভাসমান লাউ চাষ দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসেন।
তিনি বাড়ির পরিত্যক্ত ৭০ শতাংশ জমির পুকুরে মাছ চাষ ও পানির ওপরে লাউ চাষ করতে ব্যয় করেছেন পঁচিশ হাজার টাকা। এখন প্রতি সপ্তাহে ১০০-১৫০ পিস লাউ বিক্রি করছেন। যার বর্তমান পাইকারি মূল্য প্রতি পিস আকারভেদে ৩০-৪০ টাকা। কাঁচা বাজারের পাইকাররা তার বাড়িতে এসে লাউ ও অন্যান্য সবজি সংগ্রহ করছেন। এমনকি বাজারে নিয়ে বিক্রি করছেন।
কৃষক মেহেদী হাসান মধু বলেন, ‘মাছ চাষের পাশাপাশি পুকুরের পানির ওপরে মাটি উঁচু করে লাউ চাষ প্রথম ইউটিউবে দেখে শুরু করি। আধুনিক পদ্ধতিতে লাউ ও অন্যান্য সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করছি।’
Advertisement
আরও পড়ুন
নারিকেল গাছ রোপণ ও পরিচর্যায় করণীয় বিএডিসি খামারে ৩০০ একর জমিতে আউশের বীজ চাষতিনি আশা করছেন, লাউ গাছ থেকে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করবেন। তার লাউ চাষের সফলতা দেখে অনেকে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এ পদ্ধতি।
ভোটমারী ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘পুকুরের মাঝে মাটি উঁচু করে বস্তার সাহায্যে লাউ ও সবজি চাষ জেলায় প্রথম। পানির ওপরে লাউয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকও স্বাবলম্বী হচ্ছেন। আমরা কৃষকদের প্রতিনিয়ত আধুনিক পদ্ধতিতে একই জমিতে একাধিক ফসল চাষ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করছি।’
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার তুষার কান্তি রায় জাগো নিউজকে বলেন, ‘পরিত্যক্ত জলাশয়ে মেহেদী একসঙ্গে পুকুরের মাছ ও সবজি চাষ শুরু করেন। আমাদের কৃষি অফিসাররা তাকে পরামর্শ দিয়ে আসছেন। একসঙ্গে সবজি ও মাছ চাষ করে মেহেদী হাসান মধু লাভবান হচ্ছেন।’
Advertisement
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘জেলায় ভাসমান কোনো প্রকল্প নেই। তবে কেউ যদি নিজ উদ্যোগে বদ্ধ জলাশয়ের ওপর প্রকল্পটি করেন, তাহলে লাভবান হবেন।’
রবিউল হাসান/এসইউ/এমএস