ধর্ম

সাহাবির যে দোয়ায় ছিল ‘ইসমে আজম’

আনাস (রা.) বলেন, একদিন আমি নবিজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাথে মসজিদে নববিতে বসে ছিলাম। তখন জনৈক ব্যক্তি (সাহাবি) নামাজ আদায় করছিলেন। নামাজের পর তিনি দোয়া করলেন,

Advertisement

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ الْحَنَّانُ الْمَنَّانُ بَدِيعُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَا ذَا الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ أَسْأَلُكَ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «دَعَا اللَّهَ بِاسْمِهِ الْأَعْظَمِ الَّذِي إِذَا دُعِيَ بِهِ أَجَابَ وَإِذَا سُئِلَ بِهِ أَعْطَى

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিআন্না লাকাল হামদু লা ইলাহা ইল্লা আনতাল হান্নানুল মান্নানু বাদীউস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরামি ইয়া হাইয়ু ইয়া কাইয়ুমু আসআলুকা

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি। কারণ আপনারই জন্য সব প্রশংসা। আপনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মাবুদ নেই। আপনি সবচেয়ে বড় দয়ালু, বড় দাতা। আপনিই আসমান-জমিনের স্রষ্টা। হে মর্যাদা ও দান করার মালিক! হে চিরঞ্জীব, হে প্রতিষ্ঠাতা! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি।

Advertisement

তখন নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যে আল্লাহকে ইসমে আজমের সাথে ডাকে তিনি তাতে সাড়া দেন এবং যখন তাঁর কাছে প্রার্থনা করা হয় তখন তিনি তা দান করেন। (সুনানে আবু দাউদ: ১৪৯৫)

আব্দুল্লাহ ইবনে বুরায়দা (রা.) তার বাবা থেকে বর্ণনা করেন, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একবার শুনলেন এক ব্যক্তি দোয়া করছে,

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنِّي أَشْهَدُ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি কারণ আমি সাক্ষ্য দেই যে, আপনিই আল্লাহ, আপনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। আপনি একক, আপনি ওই সত্তা যিনি কারো হতে জন্ম নেননি এবং কাউকে জন্মও দেননি, কেউই আপনার সমকক্ষ নয়।

Advertisement

নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তখন বললেন, তুমি এমন নামে আল্লাহর কাছে চেয়েছো, যে নামে চাওয়া হলে তিনি দান করেন এবং যে নামে ডাকা হলে সাড়া দেন। (সুনানে আবু দাউদ: ১৪৯৩)

ইসমে আজম কী?

‘ইসমে আজম’ অর্থ আল্লাহর মহান মর্যাদাসম্পন্ন নাম। এ দোয়াগুলোতে আল্লাহর অনেকগুলো গুণবাচক নাম উল্লিখিত হয়েছে। নবিজি (সা.) ঠিক কোন নামটিকে ‘ইসমে আজম’ বলেছেন, তা হাদিসগুলোতে স্পষ্ট নয়। এ ব্যাপারে আলেমদের বিভিন্ন রকম মতামত রয়েছে। অধিকাংশ আলেমের মতে আল্লাহর মহান সত্তাগত নাম ‘আল্লাহ’ই ইসমে আজম। হজরত আবদুল কাদের জিলানি (রহ.) বলেন, ‘ইসমে আজম’ হলো 'আল্লাহ' শব্দ; দোয়া কবুল হওয়ার জন্য তা পূর্ণ একাগ্রতা ও ইখলাসের সঙ্গে বলতে হবে। (মিরকাতুল মাফাতিহ: ১/৬)

আমরা দোয়া কবুল হওয়ার আশায় ওপরে উল্লিখিত হাদিসে বর্ণিত দোয়াগুলো পড়তে পারি। এ দোয়াগুলোতে এক অদ্বিতীয় আল্লাহর প্রতি দোয়াকারীর মুখাপেক্ষিতা, নির্ভরতা ও বিশ্বাস প্রকাশ পায়।

ওএফএফ/এমএস