জাতীয়

ভিসানীতি যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কে বড় কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াবে না বলে মনে করছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

Advertisement

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সফর প্রশ্নে এসব কথা বলেন তিনি।

একই সঙ্গে চলতি মাসের মাঝামাঝিতে ওয়াশিংটনের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের ঢাকা সফরে সেন্টমার্টিন ইস্যু আলোচনার অংশ নয় বলে জানিয়েছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া র্যাবের নিষেধাজ্ঞা এবং ভিসানীতি রয়েছে। সাধারণত বড় সফরে সুসম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে যেসব অস্বস্তি আছে সেগুলো দূর করার একটা প্রয়াস থাকে। এবার সেই প্রয়াস থাকবে কি না-জানতে চাওয়া হয় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে। জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমি মনে করি না, তাদের ভিসা পলিসি আমাদের সম্পর্কে বড় কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াবে। কারণ, সাধারণ ভিসা প্রত্যাশীদের কোনো বাধা দিচ্ছে না। এটা একটা বিশেষ ক্যাটাগরিতে তারা তাদের আইন অনুযায়ী করেছে। এটা আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে আমি মনে করি না।

Advertisement

র্যাবের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনার বিষয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমার জানা মতে আমি এখনও দেখিনি এটা নিয়ে (র্যাবের নিষেধাজ্ঞা) আলোচনা করবো। প্রসঙ্গ উঠতে পারে। তবে আমাদের সবচেয়ে ভালো স্বার্থ যেগুলো সেদিকে আমরা দেখবো। অর্জন করার মতো যেগুলো আছে। আমাদের অগ্রাধিকার-সবগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা হবে।

তিনি বলেন, লুর সঙ্গে একটা টিম আসছে। ট্রেজারি এবং অন্যান্য সদস্যরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মিটিং করবে। এটা আসলে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কথা হবে।

ট্রেজারি টিমের বিশেষ এজেন্ডা আছে কি না-জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, এটা সম্পর্কে খুব ওকিবহাল নই এখনও। মিটিং হবে অন্যদের সঙ্গে। আমরা জানতে পারবো।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সহায়তা চাওয়ার প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, সহযোগিতা অবশ্যই চাইছি। তবে কীভাবে চাইছি, সেটা আমি বলতে পারবো না। সেটা বিস্তারিত বলতে পারবেন অর্থ উপদেষ্টা।

Advertisement

লুর সফরে বিশেষ একটা রাজনৈতিক গুরত্ব বহন করে। এবারের সফরকে আমরা কি বলবো-এমন প্রশ্নে তৌহিদ হোসেন বলেন, ডোনাল্ড লুর সফর মানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধিদলের সফর যে কোনো সময় গুরত্বপূর্ণ। আমরা এটুকুই বলি। তারপর দেখা যাবে না হয় কোন কোন বিষয়ে অগ্রগতি হয়। সেই হিসেবে আমরা একটা গুরত্ব নির্ধারণ করবো।

প্রতিনিধিদলের সফরে সেন্টমার্টিন আলোচনার অংশ হতে পারি কি না-জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জানা মতে না। আমাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এটা স্পষ্টত বলেছিলন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে এটা বলা হয়েছে-আমরা এটা করিনি। আমার জানার মধ্যে নেই। এর বাইরে কিছু কি না, সেটা তো আমি বলতে পারবো না।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যে ৫৭ জন মানুষকে অত্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি জেল দেওয়া হয়েছে-তার মধ্যে ৩ জন যাবজ্জীবন, ৫৪ জনের ১০-১১ বছর জেল, তাদের সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছে। তারা এখন মুক্ত মানুষ হিসেবে থাকতে পারবে। এটা আমি মনে করি যে বিশেষভাবে একটা সম্মান দেখানো হয়েছে ড. ইউনূসের প্রতি। উনি অনুরোধ করেছেন, আমিরাতের প্রেসিডেন্টকে। তারা তাদের ক্ষমা করেছেন এবং এই মানুষগুলো বা পরিবারগুলো বিরাট বিপদ থেকে মুক্ত হয়েছেন।

তৌহিদ হোসেন বলেন, উনি (আমিরাতের প্রেসিডেন্ট) অবশ্য একটা কথা বলেছেন, আপনারা যাদের পাঠাবেন তাদের আমাদের আইন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করে, একটু ট্রেইন করে পাঠাবেন। আমাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আবেগতাড়িত হয়ে তারা এটা করেছেন। তবে মনে রাখতে হবে, তাদের আইনে এটা নাই। আপনি যে দেশে কাজ করতে যাবেন সেদেশের আইন মেনে চলতে হবে।

ক্ষমা পাওয়া ৫৭ বাংলাদেশি দেশটিতে কাজ করতে পারবেন কি না-জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমি যতটুকু জানি ওখানে কাজ করতে পারবে, দেশে ফেরত পাঠাবে না। এমনকি যদি দেশে ফেরত পাঠানো হতো তবুও এটা একটা বিরাট সাফল্য হিসেবে আমরা মনে করতাম। কারণ, মানুষগুলোর জীবন শেষ হয়ে যেত। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, তারা সম্পর্ণ ক্ষমা পেয়েছে কাজেই তারা ওখানে কাজ করতে পারবেন। তবে এটা এখন নিশ্চিত করতে পারবো না, এটা অনুমান।

আইএইচআর/এসএনআর/এমএস